চোখে গুলি লেগে অন্ধ হয়ে গেছে যে যুবক,
তার নাম শোনে আজ শহরের বাতাস কাঁপে।
সে তো কোনো যুদ্ধবাজ নয়, ছিলো এক সাধারণ ছেলেবেলা—
মায়ের আদরে গড়া, বাবার কাঁধে চড়ে দূর আকাশের স্বপ্ন দেখার মতো। কিন্তু স্বপ্নের আকাশ কালো ধোঁয়ায় ঢেকে গেল একদিন। বন্দুকের নল তাকে জানালো, স্বপ্ন দেখা মানেই শাস্তি।
সেদিনের গুলির শব্দে জেগে ওঠা শহর,
আজও নিস্তব্ধ। আর সেই যুবক! যে দাঁড়িয়েছিল তার ভাই-বোনদের পাশে—
স্বাধীনতার মাটিতে সমান অধিকার নিয়ে।
সে এখন আঁধারে ডুবে, জোছনার রাতেও তার আকাশ অন্ধকার।
তবে কীভাবে দেখাই তাকে আজকের জোছনা? কীভাবে বলি, এই পৃথিবী এখনও সুন্দর—যেখানে চাঁদ এখনো আকাশের গায়ে আলোর বুনন করে।
আমি কি বলতে পারি তাকে, তোমার ত্যাগে জন্ম হয়েছে নতুন প্রভাতের? তোমার চোখের আলোয় গড়ে উঠছে ভবিষ্যৎ দিনের শিশু?
হাসপাতালের বিছানায় আমি তার কাছে বসে কেবল বলি, "ভাই, জোছনার আলো দেখতে পাও না, তবু অনুভব করো। এই আলো তোমার চোখের ঘুমন্ত তারা হয়ে জ্বলছে। তোমার ত্যাগই তো এই জোছনাকে আজ এত উজ্জ্বল করেছে। তুমি অন্ধ নও, তুমি চিরজাগ্রত— এই মাটির প্রতিটি শ্বাসে, প্রতিটি কান্নায়।"
আজ রাতের জোছনায় আমি অন্ধ যুবকের হাতে রাখি হাত। তার স্পর্শে বুঝি, তাকে দেখানোর প্রয়োজন নেই, কারণ সে নিজেই তো জোছনার আরেক নাম।