তোমার প্রতিটি পত্র আমি পড়েছি প্রিয় তটিনী,
মর্মন্তুদ তোমার সে বানী।
প্রতি ছত্রে ছত্রে প্রস্ফুটিত হয়েছে দারুণ মর্মপীড়া;
হৃদয়ের সব কথা তবুও কি হয় পড়া?
সেখানে ধরা পড়েছে কী গভীর তোমার অনুরাগ,-
তবু সেই প্রতারকের প্রতি!
আমারও সে প্রেমিকের তরে দয়া নেই এক রতি।


তোমার প্রেমের অমৃত দানে নিজেরে করেছি ধন্য;
দারুণ হিংসে হওয়ার মতো,-
প্রত্যেক প্রেমিকের জন্যে।
প্রিয় তটিনী,  তোমাকে হেলা করার ধৃষ্টতা নেই আমার;
কোন জন্মেই ছিল না; আর হবেও না আর।
বিধাতার সমস্ত নৈপুণ্য তোমাতে প্রকাশিত;-
শব্দ, উপমা সকলই সেখানে ব্যার্থ।
কেবলি ঝরে অঝর মুগ্ধতা,  নির্বাক অন্তরে!
কী নেই তোমার অতুল ভাণ্ডারে?
যা মোহিত করে না দেব কিংবা নরে!


তোমার চোখের পানে চেয়ে থেকে, আমার অন্তর পোড়ে-
দহনের সে ঘ্রাণ তুমি পাও কিনা জানি না।
জানিনা, আমার দম বন্ধ হওয়া উন্মাদ নেশার-
অধীর উত্তাল ঢেউ; সজোরে আছড়ে পড়ে, তোমার ক্রোড়ে! সেই ক্রোন্দন  তুমি পাও কিনা?
শুধু একটু জড়ায় ধরার জন্যে তোমারে;
আমার সমস্ত চৈতন্য বিবষ হয়,  অস্থির হয় অন্তর ;-
তোমাকে একটু ছোবার জন্যে আমি এই ত্রিলোকে,
অভূষিত হতে রাজি নিলজ্জের সমস্ত কলঙ্ক তিলকে।
কামনার সকল চিহ্ন একে স্পর্শ করি প্রিয় তটিনে,
কী এক প্রশান্তি নামে দেহ-মনে,  সমস্ত খানে।


তুমি কী শুধুই আমার কামনার ধন? গোপন অভিলাষ?
তুচ্ছ সে প্রেম  নয় আমার! শুধু এক দীর্ঘশ্বাস -
শুধু সে এক গোপন ব্যাথা; জানিবে না কোনদিন,
অধম প্রেমিকের গহীন অনুররণ!
রোজ, তবু সে প্রথম দিনের মতো মুগ্ধতা;
শরীরের উষ্ণতা,  হৃদয়ের রেখেছে কুসুম সিগ্ধতা।


যে প্রবল পিপাষায় খুজে ফিরি দিন-রাতে,
তবু পৃথিবীর পরে পারিনি জানাতে।
এ অক্ষমতা বিদির্ণ করে হিয়া, তবু আমার মনে;
সে সব কোমল স্পর্শ জাগিবে সংগোপনে।
তবুও রুপালি চাঁদের আলো ভরা পূর্ণিমায়;
তোমার নদীর অতল গহীন - নেবে চিনে।
জানিবে ক্ষণিকের হটাৎ খেয়াল নয়, তোমার আবেদন;
ওই নদী, সোনালি চর  এ হৃদয়ে জাগিবে চিরন্তন।