হারিয়ে গেল হালের গরু
লাঙ্গল জোয়াল মই,
হারিয়ে গেল কাঠের ঢেঁকি
বিন্নি ধানের খই।
হারিয়ে গেল পালের নৌকা
দাঁড় বৈঠা গুন,
হারিয়ে গেল বায়োস্কোপ ও
গানের গ্রামোফোন।
হারিয়ে গেল ভাওয়াইয়া ও
ভাটিয়ালি সুর,
ছেলেমেয়েরা দেখেনা কভু
কাকডাকা ভোর।
হারিয়ে গেল শীতলপাটি ও
মসলিনের শাড়ি,
পরিধানে আরামদায়ক  
খুশি মোঘল নারী।
হারিয়ে গেল কলুরবলদ
ঘানি ভাঙা তেল,
হারিয়ে গেল কুপি বাতি
বিয়ের লাঠিখেল।
হারিয়ে গেল রেডিও আর
সাদা-কালো ছবি,
হারিয়ে গেল কাঁচের চুড়ি
রেশমী ফিতা সবই।
হারিয়ে গেল মৃৎশিল্প
সোনালী আঁশ-পাট,
হারিয়ে গেল যাত্রাপালা
সানবাঁধানো ঘাট!
হারিয়ে গেল টাইপরাইটার
তালপাতার পাখা,
চার বেহারার পালকি আর
যায় নাতো দেখা।
হারিয়ে গেল হাওয়াই মিঠাই
শিশুর পুতুল খেলা,
নদীর ঘাটে যায়না বঁধু
থাকতে এই বেলা।
হারিয়ে গেল গাজীর গীত
পালা-পটের গান,
হারিয়ে গেল তামাক বিড়ি
কিমাম মাখা পান।
হারিয়ে গেল চিঠি লিখা
কলাপাতায় খাওয়া,
হারিয়ে গেল পাটের চাষ
জলে জাগ দেওয়া।
হারিয়ে গেল পাঁয়ে হাঁটা
শিলনোড়া, যাঁতাকল,
হারিয়ে গেল মাটির কলসি
ঠান্ডা সুপেয় জল।