প্রিয় বন্ধু,
         কেমন আছো? তোমার শরীল কেমন? শুনেছি কোন এক জরুরী কাজে ঢাকার বাহিরে গিয়েছ। যাই হোক অতো কিছুর খোঁজ-খবর নেওয়া হয়তো তুমি সহ্য করতে পারবে না, জানি। কি করবো বলো? চারদিকে এতো অনিয়মের মাঝে নিয়মগুলো আজকাল ঠিক-ঠাক আসে না। এবার চিঠি লিখতে অনেক বেশি দেরি করে ফেলেছি, পারলে ক্ষমা করো। তুমি তো জান; আমি আসলে একটু উদ্ভট প্রকৃতির। স্রোতের টানে শ্যাওলার মতো কখন কোথায় যাই; তার কোনো ঠিক থাকে না। কখনো কখনো নিজের অস্থিত্ব নিয়ে টিকে থাকাই আমার জন্য দায় হয়ে যায়।
         বন্ধু আজ যখন তোমায় চিঠি লিখছি অনেকটা অচেতন অবস্থা। গত সাত দিন যাবৎ জ্বর। ডাক্তার দেখিয়েছি কোনো লাভ হয়নি। এমন দিনে তোমায় খুব মনে পড়লো; তাই কলমটা হাতে নেওয়া। জানো বন্ধু? এতো একাকিত্বের মাঝেও বেঁচে থাকার অবলম্বন তুমি; তোমার স্মৃতি। তোমার হাতের সে পরশ এখনো লেগে আছে আমার দু-হাতে, সারা শরীলে। আমিতো পৃথিবীতেই স্বর্গ পেয়েছি; তোমার সে হাসির মাঝে। বন্ধু বেঁচে থাকার জন্য মনে হয় এতটুকুই যথেষ্ট ছিল। তাইতো জমরাজ কাছে এসেও ফিরে যায় শুণ্য হাতে।
         জানো বন্ধু মাঝে মধ্যে আমার মনে হয়; তোমার সাথে দেখা না হলেই ভালো হতো। তাহলে অন্তত বুকের ব্যথাটা এতো বাড়তো না। সারা রাত তোমায় নিয়ে ভাবতে হতো না। ঘুমে পুরো শরীল নির্জিব হয়ে আসে; কিন্তু দু-চোখে ঘুম আসে না। নিজেকে ধরে রাখতে পারি না; নিজের মাঝে। সে এক মসৃণ যন্ত্রণা।
          যাই হোক বন্ধু; নিজের খেয়াল রেখো। শরীলের যত্ন নিও। তোমাকে কষ্ট দিতে চাইনা বলে; না হয় বলতাম, একটু দেখে যেও। তোমায় দেখার বড্ড ইচ্ছে আজ। মনে হচ্ছে, আর কোনো দিনও দেখা হবে না। কষ্ট পেয়ো না বন্ধু। মন থেকে কথাগুলো স্রোতের ন্যায় বের হয়ে আসছে তাই। যেন কোনো বাধাই মানে না। ভালো থেকো।
  
       ইতি
তোমারই যন্ত্রণা