ফুচকার ঠেলাগাড়ির সামনে হয়তো দাঁড়াতাম
আমরা দু’জনে,
শালপাতা হাতে অজানা উত্তেজনার সাথে
ছলকে ওঠা তেঁতুলজল চুড়িদারের কোণে;
ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টির রাতে চেনা রিংটোনে
ঝিলমিলিয়ে উঠতো হয়তো
জীবন বারবার … কতবার …!


বিভোর চোখ পলকহীনভাবে চেয়ে থাকে
একের পর এক রাতজাগা ওয়ালপেপার;
ঝাপসা হয়ে যায়
ফুটিফাটা জমির ফাটলে আটকে থাকা
দাবদাহের শেষ বাষ্পে।
সহিসহীন ঘোড়া সাহস করে প্রথমবার
দুনিয়াটাকে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখে,
নিজেকে বাঁচানোর নানান আদব-কায়দা
ঠকে ঠকে শেখে-
যদি’র দুনিয়া অনড়ভাবে ভাসে ঐ জমা
জলের আঢাকা স্তরে,
বাঁচতে শিখুন অন্য কাউকে মেরে।


শীতের সন্ধ্যে
আকাশ-বাতাস মাতোয়ারা তেলেভাজার গন্ধে
জিভে জল এনে দেয়
অথচ পকেট গড়ের মাঠ,
তাছাড়া একলা আমি যে নীরস কাঠ!
কয়েকজোড়া হাত ধরাধরি করে
ঈর্ষার আগুনে ঘি ছিটিয়ে যায়
অজান্তে কিংবা ইচ্ছাকৃতভাবে,
হৃদয় যেন ছ্যাঁকা খাওয়া কুকুর
আবার … আবার আশার কথা ভাবে!


এক বান্ধবী বলেছিল জানেন
আমার মনের খুঁতখুঁতেপনা নাকি আমার
দেহের থেকেও বেশী ভারী!
পড়াশোনা ছাড়িয়ে শিশুগুলোকে
হোটেলের কাজে লাগিয়েছে দারিদ্র্য,
দেখোনা, নেতার ছেলে হাঁকায় নিত্যনতুন গাড়ি।
না, আমি আর খুঁতখুঁত করবো না-
কোনো সুন্দরীর অহঙ্কার দেখেও
একেবারে বোবা হয়ে থাকবো,
আর রাস্তায় অসহায় পকেটমারকে গণপিটুনি
খেতে দেখেও আওয়াজ পকেটে রাখবো,
তবেই না সৌভাগ্য হাতছানি দেবে
তবেই না ভালোবাসা পাশে এসে বসবে।


সৌজন্যের খাতিরে বলছি না,
আমার দরকার নাই ওরকম ভালোবাসার!
নিজস্বতা বিসর্জন দিয়ে-বশ্যতার চেন গলায় পরে
রেসের মাঠে ছুটে যাওয়া তো অসার।
কিছুদিন মোবাইলে, তারপর রেস্টুরেন্টে আর
একেবারে শেষে কামনার অন্ধকার ঘরে
নরম শরীরের দ্বিধাহীন ফাঁপরে
বহুমূল্য যৌবন নীরবে চলে গেছে ওপার।
কিংবা হয়তো আঙুরফল টক নয়,
কেবল আমারই মনে হয়
চোখের জলের স্বাদ নোনতা এখানে,
অপ্সরার দল আমাকে দেখে ভাবে
যৌবনের জলে গা-ভাসানোর কথা
আমি ভাবিনি একবারও গোপনে।


হ্যাঁ, ঠিকই ধরেছেন, আমি পুরুষ নই;
হয় মহাপুরুষ, আর নয়তো কাপুরুষ-
সেজন্যেই বোধহয় রাস্তাঘাটে বন্ধু-বান্ধবেরা সুন্দরী
দেখে উত্তেজিত হলেও আমি করিনা উসখুস …।
অগুন্তি ব্যথা বুকে চেপে রেখে
অন্ধকার চিলেকোঠার ঘর থেকে
কেন যে তাকিয়ে থাকি রাস্তার আলোকিত কোণে,
সিগারেটের টুকরোটা ফেলে দিয়ে
উঠে গিয়ে দেখি ফুচকার ঠেলাগাড়ির সামনে
যেন সত্যিই দাঁড়িয়ে রয়েছি আমরা দুজনে …!



সুমন্ত চ্যাটার্জী
১১।০৯।২০১০                 কাটোয়া,বর্ধমান।