কবিতা : সে কবিতা এখন সোনার বাংলা।
কবি : অরণ্য মজিদ।
তারিখ : ০৪ নভেম্বর ২০২০।


৭ই মার্চে ;
রেসকোর্স ময়দানে
মুজিবের উচ্চারিত জিহ্বায়
একটা কবিতা আবৃত্তি হলো।
সে কবিতায় ;
২৩ বছরের ইতিহাস ছিল,
লাল রক্তে রাজপথ রঞ্জিত ছিল,
নর নারীর আর্তনাদ ছিল,  
বোনের নষ্ট সমভ্রম ছিল,
বাবার বুকে কবর ছিল,
মায়ের চোখের কাঁদন
ছিল বহমান।
সে কবিতায় ;
কুঁজো পিঠে হেঁটেছিল মানুষ,
শিকলবন্দী ছিল পা,
তালাবন্দী ছিল মুখ,
খাঁনদের ইচ্ছার নিচে,
বাঙালির হয়েছিল বলিদান।
সে কবিতায় ;
বজ্রের ধ্বনি ছিল,
সিংহের গর্জন ছিল,
উঁচান এক আঙ্গুলের নীচে
বিশাল এক জন সমুদ্র ছিল,  
জনতার লাফানো লাঠিতে
প্রতিবাদের "হেই" হুংকার ছিল,
শব্দে শব্দে সূর্য ছিল দিপ্যমান,
জীবনের হিম কুয়াশায় ভেজা
মানুষের দল,
জীবনের পালকে পালকে সেদিন
করেছিল রৌদ্রস্নান।
সেই কবিতায় ;
শব্দে শব্দে সম্মোহনী মন্ত্র ছিল,
মানুষরা ঝুলতে চেয়েছিল
মৃত্যুর ক্রুশে,
দেশের জন্য দিতে চেয়েছিল আত্মদান।
সে কবিতায় ;
যুদ্ধের ডাক ছিল,
কামার, কুমার, কৃষক,
তাঁতি, জেলে,
কোদাল, কাস্তি, লাঠি নিয়ে
দূর্গ গড়ার আদেশ ছিল।
সে কবিতা শুনে ;
মায়ার আঁচল কেটে মা
পুত্রকে বলেছিল ;
মরলে শহীদ, বাঁচলে গাজী
এ ধ্যান বুকে নিয়ে
যুদ্ধে যুদ্ধে হও আগুয়ান।
গোলাপের ভাঁজে ভালোবাসা রেখে বধূ স্বামীকে বলেছিল ;
চাই নরক উৎপাটন,
চাই স্বাধীনতা,
চাই তোমার শহীদান।
সে কবিতায় দেশ প্রেম বুকে নিয়ে
মহাকালের এক জাতির জনক দাঁড়িয়ে ছিল,
সে কবিতার প্রতিটি শব্দ আগুনে পুড়ে পুড়ে
মানুষের বুক হয়ে ওঠে আগুনে একাকার।
জন্মভূমি কেড়ে নিবি আমার
এমন সাধ্য কার?
মরতে জানি, মারতে জানি,
জীবন যুদ্ধ জিততে জানি,
আমাদের দুই হাত জয়ের তলোয়ার।
নয় মাসে লাল সবুজের দেহে
সে কবিতা উড়ে পতাকা হয়ে।
সে কবিতা এখন জাতির জনক,
সে কবিতা এখন বঙ্গবন্ধু,
সে কবিতা এখন সোনার বাংলা।
কত সব প্রাণকাড়া শিরোনাম
সে কবিতায় বসে স্বদেশ দেখে
শেখ মুজিবুর রহমান।