আমি জানি এক গ্রামের কথা,
সেখানকার তুলোমাটিতে পড়েনি মিলিটারি বুটের ছাপ,
যেখানে আজো রাইকিশোরী এসে জানায় জনান্তিকে – কিছু চাই?
আর প্রতি সন্ধ্যায় উলুধ্বনি পাল্লা দেয় আজানের সাথে,
ভাবো তো কত আনন্দ!


আমি দেখি সেই গ্রামের কথা,
যেখানে শীতে নকশী কাঁথা মুড়ে দেয় ধান ক্ষেতের পর ধান ক্ষেত,
সামান্য জলে দুধসাদা পা ডুবিয়ে একটা মেয়ে বলে – কিছু চাই?
যে গ্রামে বৃদ্ধ নেই, সবহারা নেই, বাঁজা গরু নেই, নেই বেশ্যা।
ভাবো তো কত আনন্দ!


আমি পড়ি সেই গ্রামের কথা,
যেখানে কমলালেবুর গাছ পড়ে থাকে অদেখাই, ঝড়ঝঞ্ঝা সঙ্গী করে,
সেখানে কুমোর পাড়ায় গরুর গাড়ি আর বেচে না কলসি হাঁড়ি,
শুধু নোয়াপাড়ার মাঠের ওপরে কাজলকালো চোখ মেলে কেউ বলে – কিছু চাই?  
আমি জানি, সেথায় পোড়া বাড়ি নেই, রেলগাড়ি নেই, নেই কৃষ্ণের বাঁশী।
ভাবো তো কত আনন্দ!


আমি লিখি সেই গ্রামের কথা,
সে গ্রামের ঈশ্বর এই কিছুদিন হল ব্যস্ত মধুচন্দ্রিমায়,
আর মসজিদের তরুণ ইমাম ছুটি দিয়েছে আল্লাকে,
আর খুব ভোরে শিশির আবিষ্কারে ব্যস্ত মেয়েটা মুখ উঁচিয়ে খালি বলে – কিছু চাই?
এ গ্রামে সবাই শিশু, কেউ সুলভ, খালি রাতদিন গীতিকবিতায় সুর দেয়।
ভাবো তো কত আনন্দ!