শক্তিদা জিও।

তুমি বলেছিলে,
যেতে পারি কিন্তু কেন যাব
সন্তানের মুখ ধরে একটি চুমো খাব

মনে পরে সত্তরের সেই অশান্ত সময়,
যখন কবির কথাও মনে হচ্ছিল অপচয়,
তোমার কবিতায় ঝড় তুলে, আমায় করেছ পাগল,
আর সেই ঝড় ক্রমে ছড়িয়েছিল দাবানল,
মরুদ্যান দিলে তুমি, মরুভূমি ধুধু,  
পুরস্কার? সেতো তোমার কাছে একটি পালক শুধু –
মুকুটে জুড়ে গেল মাত্র।
যেমন সুরার সাথে পানপাত্র।

জানো শক্তিদা,  
তোমার কবিতা আজ কেমন প্রানবন্ত,
তুমি আজ কিভাবে হ্রদয়ে আছ জীবন্ত,

হতে পারতঃ-
চোখের সামনে অন্যায় হতে দেখে চুপ থাকতেই পারি,
কিন্তু কেন থাকব?

আদতে-
চোখের সামনে অন্যায় হতে দেখে প্রতিবাদ করতেই পারি,
কিন্তু কেন করব?

আর এই ভাবেঃ-
ধর্ষন হতে দেখে দুর্বার হতেই পারি, কিন্তু কেন হব?
দুহাতে চুরি আটকাতেই পারি, কিন্তু কেন আটকাবো?
ইচ্ছা করে ভালমানুষ হতেই পারি, কিন্তু কেন হব?
অন্যায় ভাবে লকআউটে আমি নীরব, কিন্তু কেন সরব হব?
দুমুঠো উপার্জনে সৎপথে আমি যেতেই পারি, কিন্তু কেন যাব?
পাশের ফ্ল্যাটে অসুস্থ হলে বেরোতেই পারি, কিন্তু কেন বেরব?
অন্ধমানুষের পথে হাত ধরতেই পারি, কিন্তু কেন ধরব?
কাগজে কাগজে ঝড় তুলতেই পারি, কিন্তু আমার কি দায়?
কালোবাজারি মাথা তুলে দাঁড়ায়, আমার আসে কি যায়!

এমনি আরও কত.. আরও কত.. আরও.. আরও.. আরও

দেখছো শক্তিদা,  
তোমার কবিতা আজ কেমন প্রানবন্ত,
তুমি আজো কত জীবন্ত,
আজীবন তুমি চলেছ সত্যের পথ মেনে,
আজ আমরা তোমাকে কোথায় ফেলেছি এনে!
হতে দেখছ তো সমাজের অধোগমন!
কি পরিবর্তন! কি পরিবর্তন!

শক্তিদা,
কবিতা লেখা ছেড়ে দিতেই পারি, কিন্তু কেন দেব?
কলমের মুখ ধরে একটি চুমো খাব।
শক্তিদা তোমায় ভুলে যেতেই পারি, কিন্তু কেন যাব!
তোমাকে একবার হারিয়েছি, আর না হারাবো।

জিও শক্তিদা।