(আজ ভ্যালেন্টাইন ডে। কি আপদ! প্রেমের দিনের জন্য মাত্র একটা দিন বরাদ্দ! প্রেম কি শুধু দামী দামী উপহার দিলে হয়, নাকি শরীর ছাড়া প্রেম পায় না! আমার তো মনে হয় ভালবাসার জন্য মনের মানুষকে একটিবার চোখে দেখারও প্রয়োজন নেই, আমার কাছে প্রেম মানে প্রেয়সীর চোখের স্বপ্নভাসা নিশুত রাতে একটা কবিতা। ব্যস! যাই হোক নাটকে ফেরা যাক)  



ভাস্করাচার্যঃ না না! আপত্তি? (মৃদু হাস্য) আমার মার আবেদনে আমি আপত্তি করিব তাহা কদাপি হয়! [লীলাবতী লজ্জায় মুখ নীচু করিল] তুমি কাল মধ্যাহ্নভোজনের পর সমগ্র দ্বিপ্রহর ব্যাপিয়া উহা নিরীক্ষণ করিও।


লীলাবতীঃ পিতা! আপনার আর কিছু প্রয়োজন? আমি কিয়ৎকাল যাবৎ ধরে পরিলক্ষন করিতেছি আপনার স্বাস্থ্য ভাঙ্গিয়া পড়িতেছে। অনুমতি করিলে বৈদ্য ডাকিয়া আনি? আপনি....


ভাস্করাচার্যঃ (সশব্যস্ত) না না! আমার কিছুই হয় নাই, বৃদ্ধবয়সে বার্ধক্য তথা জড়ার কবলে তো মা সকল মানবকেই পড়িতে হয়। ভাবনা করিও না। তুমি কল্য তোমার মার মনিমুক্তখচিত শিরোভূষণটি পরিয়া থাকিও। তৎসহ উপযুক্ত পরিচ্ছদ। মহেন্দ্র আসিতে পারে। কল্য আমি আশীর্বাদ করিব। কিন্তু মা! সাবধান, আমার যন্ত্রে অঙ্গুলিস্পর্শও যেন না ঘটে। সামান্য ভুলত্রুটি হইলে আমাকে আরো পঞ্চশতবর্ষকাল অপেক্ষা করিতে হইবে।  


লীলাবতীঃ সে সম্পর্কে আপনি নিশ্চিন্ত থাকিতে পারেন, পিতা।


ভাস্করাচার্যঃ (ঢেকুর তুলিয়া) আঃ কি প্রশান্তি। এ আমার দেহের প্রশান্তি নহে, মনের। আমি জীবনের শেষ যুদ্ধেও জয়লাভ করিতে চলিয়াছি। এক্ষনে তুমি আহার করিয়া লও। আমি শয়ন করিতে চলিলাম।


লীলাবতীঃ (উচ্ছিস্ট সামগ্রী তুলিয়া) যথা আজ্ঞা পিতা।


[চতুর্থ দৃশ্যের সমাপ্তি]


[পঞ্চম দৃশ্যারম্ভ]


কাল- অপরাহ্ণ
[শয়নকক্ষে ভাস্করাচার্য বাতায়ন পথে পার্শবর্তী বৃক্ষের প্রতি চাহিয়া একমনে কি ভাবিতেছেন]


ভাস্করাচার্যঃ লীলাবতী মা আমার সেই মধ্যাহ্ন হইতে আমার গবেষণাগারে। শৈশব হইতেই বড় কৌতূহলপ্রিয় মা আমার! কতবার গবেষণার সামগ্রী ভাঙ্গিয়া তছনছ করিয়াছে। (অধরে প্রশ্রয়ের মৃদুহাস্য) থাক। দেখুক প্রাণভরে দেখুক। কিন্তু আমার আজ এইরুপ অস্থিরবোধ হইতেছে কি কারন? মনটা অকারনে বিষাদগ্রস্থ হইয়া যাইতেছে। ক্ষনে ক্ষনে ললাটে বলিরেখা স্পষ্ট হইয়া উঠিতেছে। কি কারন? কি কারন? বাহিরবৃক্ষশাখা হইতে বায়সের ঘনঘন কর্কশ ধ্বনি বারংবার আমার কর্নে আঘাত করিতেছে। কি কারন? কি কারন? কোনরূপ ঐরিসদৃশ বিপদাশংকা ঘনায়মান হইবার পুর্বাভাস! তবে কি....


[সবেগে লীলাবতীর প্রবেশ। সে পিতার পায়ে আছড়ে পড়ে। আলুথালু কেশ মাথার মহামুল্যবান শিরোভূষণ ভুলুন্ঠিত হয়]


ভাস্করাচার্যঃ (নিদারুন চমকিত) কি হইল মা! কি হইয়াছে? তুমি বল, শীঘ্র কহ মা! মা! তোমার কিছু...বলো...



(লীলাবতীর কি হল? জানাতে আসছে কাল দ্বাদশ পর্ব)