এখনো খোলা আছে বাতাস-ধোয়া জানালা,
জানালার পাশে উন্মুক্ত টেবিল, তাতে আধ খাওয়া চায়ের কাপ,
একটা পুড়ে যাওয়া সিগারেট,
আর একটি কবিতা – খোলা পাতা, অসমাপ্ত।


আচমকা ধড়মড় করে উঠে দেখি;
আমার দুচোখের কোনে রক্ত-জমাট
চারদিকে গোলগোল গাছের গুড়ি আর দৈন্যতায় ভরা দুঃখ জিজ্ঞাসা
ফিরে যাওয়া যাবে না আর ঋনশোধে ফিরতেও চাই না আমি।


ওরা যারা আমাকে নিয়ে এসেছিল এখন চলে যাচ্ছে,
ওদের অপসৃয়মাণ ছায়াগুলি যার যার বাড়ির নিভৃত নিরাপদ কোনে ফিরে না যাওয়া অবধি
আমি আটকে রাখব বৃষ্টি, বাতাসও ততটা জোরে বইবে না।
ওদের কষ্ট হতে পারে।


চারদিকে কি ভয়ংকর নোংরা জলের মত অন্ধকার,
এখনও জানিনা অতগুলো সিঁড়ি টপকাবো কেমন করে?
নিজেকে পুরুষ বলে প্রতিষ্ঠিত করেই শেষ হল গল্প – মানুষ হওয়া আর হল না।
বাবা বলেছিল চরকের মেলায় নিয়ে যাবে, যায় নি।
কেউ তো অন্তত একজন কথা রাখো!
খানিক মুখ তুলে শুধোই – নরক কেমন মাগো? দেখে আসব না হয় ওবেলা।
কপালে অনেক অনেক জন্মের মায়েদের হাত – ঘুমিয়ে পড় বাবু, এবার ঘুমো।


ও কে? কে ও? ডুবন্ত পাথরের নিচে ও কেগো?
ফোঁটা ফোঁটা শিশিরে ভিজে যাচ্ছে যোনি, স্তনবৃন্ত, নরম পেলব নাভি!  
স্নিগ্ধা! স্নিগ্ধা? এলে! এলে তবে?
স্নিগ্ধা আমি তোমার গভীরে আর চুম্বন রাখতে পারব না।
আমার জিভ, ঠোঁট সব গলে যাচ্ছে দেখতেই তো পাচ্ছো।  
কোন উত্তরাধিকার রেখে গেলাম না অথবা পিছুটান।
কে আছো কোথায়!
ঢেকে দাও, ঢেকে দাও ওর চোখদুটো শুধু, ও মায়ায় শুধু আমি আছি।


মিষ্টি খেতে বড় ভালবাসতাম। ওদের পেটভরে খাইয়ে দিও।
কিছু অন্ধ শৃগাল রক্তবর্ণ ধারন করেছে অনেক আগেই।
পেট নাভি ঘিরে দাউদাউ আসক্তির সুতো।
আনন্দ,শোক,দুঃখ,ভয়,ঘেন্না – কোমরের লজ্জাবস্ত্রের মতো খসেছে একটু আগে।
লোভটা গেল না - শিশুর নরম ত্বক ছোঁয়ার লোভ।
যা যা চলে যা যত কামুক কুকুরীর দল।  
ফেলে দে চুলোয় যত ওষুধবিষুধ – সব শালা ব-য়ে আকার, আরব্যরজনী!  


খুব কাছ থেকে ফোঁটা ফোঁটা সবুজ উত্তাপ খুব ধীরে ধীরে নামছে নাভি বরাবর
সে কবে আমার মায়ের সাথে জুড়ে ছিলাম এই অক্ষস্থান বরাবর,
সেই কবে ছিঁড়েছে নাড়ি, আজ না হয় আবার ছিঁড়ল।
মা তুমি কেঁদো না, নীতিবাক্যের বই খুলে বসো,
সেই যে ভাবে ভোরবেলা পড়াতে আমায়, এবার নিজেই নিজেকে পড়াও –
জন্মিলে মরিতে হবে অথবা ভগবান যা করেন মঙ্গলের জন্য এটসেট্রা এটসেট্রা।
আর আসব না ফিরে। নাঃ। ধানসিঁড়ি টিড়িতেও নয়!  


আমাকে পুড়িয়ে ফিরে গিয়ে,
জানলাটা বন্ধ করে দিও, বৃষ্টিতে ভিজে না যায় আমার উন্মুক্ত টেবিল।
ওর পাশেই আমার অসমাপ্ত কবিতা... পারলে তার নিচে লিখে দিও –
সমাপ্ত।