মৃদুল, আলোচনা সভায় তোমার 'অন্তরের কিছু কথা' শিরোনামের লেখাটি পড়লাম। তোমার মনের ক্ষোভ নাড়া দিয়ে গেল ভীষণভাবে! একটা কথা সত্যি, এ জগতে তোষামোদের মত জিনিস আর নেই। আর কবিতার জগতে তো বিপ্লব চলছে এখন - আমারো পরান যাহা চায় - এর পরিবর্তে - জীবনের টিকটিকি দেওয়ালের রস চিপে খায় - এই সব লাইন সমৃদ্ধ কবিতারই কদর বেশী। তার মানে এমন লিখবে যা তুমি নিজেই বুঝলে না, আর নিজেই যা বুঝলে না অন্যরা তো আরো বুঝবে না, আর যতই বুঝবে না, ততই তোমাকে 'সেরা কবি' আখ্যায় ভূষিত করবে, প্রশংসার বাণ ডেকে যাবে। আর পর্ব সমৃদ্ধ কবিতা আমিও লিখেছি, তার একটাই উদ্দ্যেশ্য যাতে বিশাল কবিতা একেবারে পড়তে পাঠক বিরক্ত বোধ না করেন। তাই বলে ৫০-৬০-৭০ পর্ব!!! বাপ রে বাপ! এলেম আছে বলতে হবে। যাই হোক তাঁরা বড় কবি, আমার এন্টেনা সেই অবধি ধরতে পারে না। একটা কথা সত্যি, সেই আগের ফ্লেভার আর নেই এই কবিতার আসরে। নিয়মের কড়াকড়ি আসরকে গুদামে পরিণত করেছে। কবিতা আসবে মনের খুশিতে, আমার কবিতার সংখ্যা ১০০ হোক বা ১০০০, কি আসে যায়। আমার পরিচিত এক কবির এ অবধি ৪৭২ টি কবিতা লিখেছে। দেশ পত্রিকায় এ অবধি ৪০র ওপর কবিতা পাঠিয়েছে, ছাপেনি। আসলে এই আসরে তো নির্বাচক মণ্ডলী নেই, তাই আমি যা লিখব তাই 'প্রকাশিত' হবে। যেমন আমি লিখেছিলান -


শরৎকালীন নগ্ন প্রভাতে, দেখেছি তোমায় হিমেল রাতে
                           – এভাবেই বুঝি কবিতা হয়?
ধেয়ে আসে ঐ ন্যাড়া ভুত, করতে যদিও পারছে না জুত
                           - ওরে বাবা বড় লাগছে ভয়!
                           (২৩/০২/২০১৪)


এটাও কবিতা!! কেউ বলল -> দারুন অভিজ্ঞতাসমৃদ্ধ ভাবনা ..., কেউ -> এই নিত্য নতুন আবিসকার আমাকে মুগ্ধ  করে নিরন্তর, কেউ -> দাদা, কি বলবো, অসাধারণ! কেউ-> দারুণ ছ্ন্দ লাগেনি মন্দ,  আবার তুমি বললে -> দারুন লাগল। অসাধারন লিখেছ। অনেক ভাল লাগল পুরো কবিতাটিই। দুর্দান্ত হয়েছে।    


এই তো অবস্থা! অথচ আমি যাকে কবিতা বলে মনে করি, তাতে সাড়া পেলাম কম। হয়ত ততদিনে 'বড় কবি' হয়ে উঠতে পারিনি তাই।


বলাকার দীঘর্সারি           দিয়ে বিশ্বচক্রপাড়ি
            ফিরিতেছে আপন বিবরে ।
ধীরে ধীরে কালো ছায়া      যেন মসীসমকায়া
          ধরিতেছে বিশ্বঘিরে ।।    
...................................
...................................
অবিরত জোছনায়              ভিজিছে পৃথ্বীময়
           গ্রামগুলি (ছায়াঢাকা নীড়)।
গভীর মমতাচুমে              জোছনা লুটিছে ভুমে
             (অপেক্ষা)  কখন সুর্য ছড়াবে আবীর ।।
                               (১৮/০৬/২০১৩)


তোমার বাকি বক্তব্যের সাথে আমি একমত, তাই সেটা আবার লিখে বহর বাড়াতে চাইনা। শুধু একটাই আপত্তি আছে, তুমি এই কবিতার আসরে তার (!) সাথে যে কথোপকথন চালাচ্ছিলে (কবিতা বহির্ভুত) সেটা উচিৎ হয়নি। সেই সময়টা আমি সাময়িক বিরতি নিয়েছিলাম। আমি থাকলে তোমাকে শুরুতেই বারণ করতাম। আর মহামান্য এডমিনেরও এই পাতার নিয়মাবলীতে সেকথার উল্লেখ করা উচিৎ ছিল।


এই কথায় মনে পড়ল (আশা করি এই লেখাটি মহামান্য এডমিন পড়বেন), এই পাতায় গোদা ইংরেজিতে যাকে বলে - do or don'ts - সেই রকম একটা নিয়মাবলীর তালিকা যোগ করা উচিৎ। তাহলে সকলেরই সুবিধে হয়, মানে আমার মত মোটাবুদ্ধির মানুষদের আর কি।


তবে শেষ কথা, এটা তোমারও জায়গা, কারো কথায় অভিমান করে চলে যেতে নেই, ১৪৫টা কবিতা তো আর টুকে হয়নি! সেটা মাথায় রেখো। এই জায়গা তুমি তৈরি করেছ, তোমার অধিকার আছে এখানে জাঁকিয়ে বিরাজ করার। আর লোকে? সেতো একটা গানই আছে - বাংলায় - কিছু তো লোকে বলবেই, লোকের কাজই হল বলা।