নার্গিস সুলতানা,
বয়স- বিয়াল্লিশ বছর,
দুই ছেলে এক মেয়ে।
স্বামী সিরাজগঞ্জে চাকরি করে,
মাসে একবার বাড়ি আসে!!


বড়  ছেলে,
বিবিএ শেষ করে
নরসিংদীতে একটা ছোট চাকরি করে।
দু-তিন মাস পর পর বাড়ি আসে!


ছোট ছেলে,
এ বছর কলেজে ভর্তি হয়েছে,
এখন মেসে থাকে।
সপ্তাহে একবার বাড়ি আসে,
বাজার, ঔষধ আর প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি
কিনে দিয়ে চলে যায়,
পাঠে মন দেয়।


বড় মেয়ে,
বিবাহিতা,
দু'বছর হলো ঘর করছে,
গত বছর একটা পুত্রসন্তান জন্ম দিয়েছে।
কৃষি পরিবারের বউ,
সারাদিন শুধু কাজ আর কাজ!!
রান্না বান্না, বাসন মাজা, গরুর খাবার দেয়া,
শ্বশুর শাশুড়ির যত্ন, ছেলের দেখভাল করতে করতে
সময় হয়ে ওঠে না মা কে দেখতে আসার!!
প্রায় প্রতিদিন ফোনে কথা হয়,
তাতে কি আর মন ভরে!!


এ বছর মায়ের জন্য একটা টিভি কিনেছি,
অনুষ্ঠান, খবর দেখে সময় কাটাতে পারবে,
ছেলে-মেয়ে, স্বামী ছাড়া কি,
টিভি দেখে সময় কাটানো যায়??


এ বছর মায়ের জন্য একটা ফ্রিজ কিনেছি,
মাংস রান্না করলে মন ভরে খেতে পারে না,
ঢেকে রাখলেও বিড়ালে খেয়ে ফেলে,
সবজি-ফল, দুধ সবই নষ্ট হয়ে যায়,
নষ্ট হয় কারন মা তো একা!!
সব কিছু রেঁধেই খেয়ে ফেলতে পারে না!
আবার প্রতিবেশীর ফ্রিজে রাখতে গেলে অনেক কথা শোনায়!
মা এবার খুব করে বলেছিলো,
" বাবা, এবার ঈদের বোনাস পেয়ে কারো জন্য
কিছু কেনা লাগবে না, আমার একটা ফ্রিজ লাগবে"
মায়ের কথা শুনে আমার অনেক খারাপ লেগেছিলো,
এবার ঈদে বাবা আর আমি মিলে,
একটা ফ্রিজ কিনেই ফেললাম।


টিভি আছে, ফ্রিজ আছে, বড় একটা ঘর আছে
নেই শুধু স্বামী, তিলেতিলে বড় করা সেই বুকের ধন গুলো,
মা আজ শুধুই একা!!
সারা ঘর নিশ্চুপ,
নেই সন্তানের কোলাহল.....
মা আজ বড়ই একা!!!!!


৯ই ভাদ্র, ১৪২৬
আনন্দী মোড়, মাধবদী, নরসিংদী।