''যাবেন বাবু''
খেয়াল করে দেখি, আশে পাশে কাউকে দেখছিনা,
রাস্তার নিয়ন আলো মাঝে মাঝে হটাত নিভে যাচ্ছে।
নির্দিষ্ট বাসস্টপে অনেকক্ষন বাসের দেখা মেলেনি।
''চলুননা বাবু''
এতক্ষন ভাবছিলাম হয়তো বাসের জন্য অপেক্ষা ;
মাঝবয়সী মহিলা আমার দিকেই একদৃষ্টে চেয়ে।
মুখজুড়ে যে আর্তি ফুটেছে, ওটা যেন খুব চেনা চরিত্র ।
''বাবু চলুন না''
সংযত স্বরে বলি কোথায় কেন যাব বলবেন?
আপনি কি বাসের জন্য অপেক্ষা করছেন!
কোন অপরিচিতা ডাকলেই সাড়া দিতে বাধ্য নই ।
''ছেলেটা ক্ষুধার্ত ''
-কোথায় আপনার ছেলে?
-সামনে ভ্যাটের পিছনে একটা ঝুপড়ীতে ।
-সেকি সে সেখানে একা আর আপনি এখানে?
কোন কথা না বলে, মাথা নিচু করে থাকে সে ।
কি ভেবে মনে হোল, এগিয়ে দিলাম সবুজ নোট ।
আলো জ্বলে উঠলো,মুখে তার তীব্র বিরক্তির ঘৃণা !
- ভুল হয়ে গেছে, ছেলেটা হয়তো কাঁদছে, যাচ্ছি।
-  টাকাটা নিয়ে যান, শুনছেন টাকাটা নিয়ে যান ।
যেতে যেতে সে বলে গেল, অনেক অনেক কথা।
- ভিখারী নই ,গতর খাটিয়ে রোজগার করি বাবু।
আমি আমার কাজের যোগ্য সম্মান আশা করি।
আপনাদের মত দাদা দিদিরা বিনা পরিশ্রমে খায়;
মিথ্যাকথা বলে গাড়ি বাড়ি দামি পোশাক পড়ে ।
আকাশ থেকে বন্যার জল দেখে কেঁদে ভাসায় ।
টাকাটা ওদের দিয়ে দেবেন, বুঝলেন বাবুমশাই।
মুখ লুকাতে জায়গা খুঁজলাম।বাস আসতেই চড়লাম ।
ভাবলাম, সবুজ টাকাটা দামি ফ্রেমে বাঁধিয়ে রাখব।