যেতে যদি চাও চলে যাও
দরজায় কড়া নেড়ে আওয়াজ তুলো না বৃথা
ছলনায় ভুলানো বাতাস অবাক করে
তোমায় ডেকে নিয়ে যায় তেপান্তরে মাঠে, বুনো ঘাসে
দীঘল ছায়ায় শূন্যে উড়া চিলের খসে পড়া পালকের মতো
অস্তিত্বহীনতায় ঘুরতে ঘুরতে মিলবে কোন নি:সীমানায়?


আমিও তোমার মতো ছুটে চলতে চেয়েছি
পথে বাদাড়ে প্রান্তে
কোন নাড়ীর বন্ধনে রয়ে গেলাম খিল এঁটে বদ্ধ ঘরে।।


যেতে যদি চাও চলে যাও
সাথে নিয়ে যাও শিশির ভেজা ভোর
নরম মেঘ রাঙা প্রথম সকাল
অলি গলি জঞ্জাল।।


আমিও দুরন্তরে ছুটতে চেয়েছি একদিন
বাধা পড়ে পিছুটান
বৃষ্টি ভেজা সেসব দিন
দিগন্ত ছুয়ে চলে যাওয়া রেললাইন
চলন্ত রেলগাড়ীর হুইসেল
নিভৃতে মায়াময় প্রান্তর আর অমোঘ নিয়মের বেড়াজাল।।


যেতে যদি চাও চলে যাও
আষাঢ়ের রংধনু বুকে করে নিয়ে যাও
রাখালের বাঁশি, ছুয়ে যাওয়া বাতাস
সুতো ছেড়া ঘুড়ি
লাটাই হাতে বালক ছিন্ন করে নিয়ে যাও
ফিরে আর এসো না।।


আমি পারিনি যা
তুমি পেরেছো অবলীলায়
তোমার পিছুটান নেই
আমি বড় বেশি বেধে গেছি পিছুটানে লোকালয়।।


আমারও বুকের ভেতর নানা রংয়ের ঘুড়ি উড়ে
আমারও লাটাই সুতো ছিড়ে উড়ে যেতে ইচ্ছে করে
তেপান্তরে।
পাশ ঘেঁষে ছুয়ে যাওয়া পাখির পালক
অস্পষ্ট কোলাহলে আমি বধির হয়ে আছি কিছু কর্তব্যের শৃঙ্খলে।।


কোটেরহাট বাজারের কোলাহল
ইলিশা নদীর কলকল ছল
আঁধার ভোরে মুয়াজ্জীনের সুমধুর করুণ আজানের ধ্বনি
আর ছিন্ন ছিন্ন মেঘেদের মায়া ছেড়ে
আমি যেতে পারি না কস্মিনকালে
তোমার মতো লক্ষ্মী ছাড়া বাউন্ডলের সাথে।।


যেতে যদি চাও চলে যাও
আমি রয়ে গেলাম আদিমতায়
ডেকো না আমায়।।