চল্লিশ বছর পর


তুমি এসেছিলে
রাস্তার ল্যামপোস্টের মতো দাড়িয়ে ছিলাম
সে বিকেল টায় বিদায়ের বেলা।
এ বিদায় কি ছিল জানি না, হয়তো কিছু কালের  
হয়তো এক জীবনের
কিন্তু সেই দিন চিরবিচ্ছেদের সাদ আমি পেয়েছিলাম।


ইউনিভার্সিটির ক্যম্পাস, সবুজে আছন্ন মাঠ,
লাল বাগের চায়ের দোকান, রাস্তার ফুটপাত
তাজহাট রাজবাড়ীর সিড়ি
অথবা রিকশায় হুড় তুলে লুকোনো মুখ
প্রতিটি জায়গায় তোমার স্মৃতি পড়ে আছে।
পড়ালেখা ঠিক ঠাক করেছিলাম কিনা
অধিকাংশ সময় ক্লাস ফাকি দিয়ে
তোমার হাতটি ধরে ছিলাম কিনা
সেসব তুমি জান।
আমার এ ক্যাম্পাস মধুর ক্যাম্পাস
রাতুল মামার রংচায়ের কাপ মিথ্যে বলবে না
দেশ বিদেশ, রাষ্ট্র, পলিটিক্স, হিস্টোরি, রিলিজিয়নের প্রলাপ  
বিশ্বাস কর এতো তথ্য উপাত্ত
গড়গড় করে কোত্থেকে আসত  জানতাম না
হয়তো তুমি পাশে ছিলে বলে।


অথচ শেষবারটায় বিসিএস হলো না
তোমার বাবা তোমার নতুন ঠিকানা খুঁজে পেল
তুমি জানালে তুমি নিরুপায়
তাই  নিজেকে অনেক কিছু বুঝিয়ে.....
শেষ অনুরোধটি রেখেছিলাম
তুমি রেখেছিলে
তুমি এসেছিলে চল্লিশ বছর পর
তুমি এসেছিলে
যেন হাজারো সৌরদিবসের পর
হঠাৎ কোন একদিন সূর্য গ্রহণের মতো
তুমি এসেছিলে।


তোমাকে নিয়ে আগের সেই স্মৃতি গুলো
বাংলার মঞ্চ কিংবা বৃন্দাবন সবজায়গায় ঘুরলাম
তুমি নিঃসংকোচে হাতটি বাড়িয়ে দিয়েছিলে
অথচ আমি সংকোচে কুঁকড়ে গেছিলাম
হাতটি ধরতে পারি নি
ধরি নি।
রোড এক্সিডেন্টে তোমার বিসিএস হাসব্যান্ডের মৃত্যু
ছেলে মেয়ে সিটি শহরে করেছে নিজের বাড়ি
নাতিনাতনি নিয়ে বেশ আছ জানালে।
একটি পত্রিকার দোকানে হলো আমার ঠিকানা।


তুমি এসেছিলে কথা রেখেছিলে
আমি রাখতে পারি নি
রাখিনি।