আমি নদী, আমার পরিচিতি আমি নিজেই ।
কখনো জল হয়ে জীবন
আবার কখনো ভাসিয়ে হই মৃত্যু ।
কখনো সমতল, কখনো পাহাড়ের চোরাগলি পথে
বয়ে চলি আপন মনে, আপন কলকল ধারায় ।
কখনো শান্ত, কখনো মাঝে হারাই উত্তালতায়,
আমার বুকে জমানো কতো আনন্দ, কত ব্যথা
শীতল জলধারায় চাই সুন্দর ভাবে রাখতে ।
কিন্তু আমার কি করার আছে বলো,
প্রকৃতির নিয়মানুবর্তিতায় আমি বাঁধা ।
কখনো স্টিমারে, কখনো ছোট্ট ডিঙ্গিতে
অপার আনন্দের আতিশয্য মেখে
হাঁসি উচ্ছলতায় তোমরা করো এপার-ওপার ।
মাঝি ভাইয়ের ভাটিয়ালি সুরে ছলাৎ-ছলাৎ
সুরের মূর্ছনায় জুড়ায় আমার মন-প্রাণ ।
কখনো আমার স্রোতের টানে হয় প্রাণের বিনাশ,
কেউ ডুবে মরে জুড়াতে চায় তার যাতনা,  
কখনোবা পাড় ভেঙে ডোবে ঘর বাড়ি ।
প্রবল বন্যার প্লাবনে আমার জলের তরঙ্গে
তোমাদের চোখে দেখি জলের ধারা ।
জানো খুব কষ্ট পাই কারণ আমি তোমাদেরই মত,
তোমরা বোঝনা আমার মনের যন্ত্রণা !
আবর্জনা ফেলে কর প্রকৃতি-দূষণ  ।
দাও সাজা,  আমি তো তোমাদের চির বন্ধু নদী ।
প্রবাহিনী, স্রোতস্বিনী, তটিনী, তরঙ্গিনী, স্রোতস্বতী,
নির্ঝরিনি, সমুদ্রকান্তা, মন্দাকিনী, কল্লোলিনী ....
যে নামেই ডাকো না কেন, দেবো আমি সাড়া
দুঃখ সুখের সাথী হয়ে বয়ে যাব নিরবধি ।
               ******