তাঁরও একটা নাম ছিল,
সে নামেই তাঁর বিয়ে হয়েছিল,
যদিও তখন কোন জন্ম সনদপত্র রাখা হতো না।
তিনি কখনো বিদ্যালয়ে যান নি, তাই তাঁর কাছে
কোন বিদ্যালয়ের একটাও সনদপত্র ছিল না।  
তবুও, তাঁরও একটা নাম ছিল!

তাঁর কন্যা সন্তানের জন্মের কয়েক বছর পর
সবাই জেনে গেল, সে সন্তান মানসিক প্রতিবন্ধী।  
সেই থেকে জনে জনে মুখে মুখে
তাঁর নাম হয়ে গেল ‘পাগলীর মা’। তাঁর আসল নামটি
হারিয়ে গেল বিস্মৃতির অতলান্ত সায়রে। সুস্থ মানুষজনের
অসুস্থ মানসিকতা একটি নামকে চিরতরে ঢাকা দিয়ে গেল!  


প্রথম প্রথম তিনি আপত্তি করতেন।
ঐ নামটি শোনা মাত্র তিনি শিশুটিকে বুকে চেপে ধরতেন।
প্রতিবাদ করতেন, তাঁকে ঐ নামে ডাকতে নিষেধ করতেন।
কালক্রমে তিনি সর্বংসহা হয়ে গেলেন।
নিরুপায় তিনি সেই আপত্তিকর নামটি মেনে নিলেন,
আসল নামটি আসলেও তিনি চিরতরে ভুলে গেলেন!    


পাগলী মরে গেছে বহু যুগ আগে,
কিন্তু তার নামটি সে রেখে গেছে অবিচ্ছেদ্যভাবে
তার মায়ের নামের সাথে।
সেদিন বহু বছর পর আমাকে দেখে
এ ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধা সামনে এগিয়ে এসে জিজ্ঞেস করলেন,
“মোক চিনছেন বাহে? মুই পাগলী’র মাও”!


বিন্যাগাড়ী, আদিতমারী তে ১৭ আগস্ট ২০১৯, অপরাহ্ন ৫-৩৩ দেখা এক বৃ্দ্ধাকে স্মরণ করে কবিতাটি রচিত হয় ঢাকার উদ্দেশ্যে চলতি পথে (বগুড়া পার হয়ে), “আগমনী স্ক্যানিয়া” বাসে বসে।  
রচনার সময়ঃ ১৯ আগস্ট ২০১৯, অপরাহ্ন ১-২৩