অনামিকা, আজও তুমি জানতে পারলেনা,
প্রথম দর্শনেই তোমাকে আমি দেবীর আসনে বসিয়েছিলাম।
তোমার সবচেয়ে বড় ঐশ্বর্য তোমার নিষ্পাপ মুখে নির্মল হাসি,
সেটুকুই আমি প্রথম দিনেই চুরি করে এনে আমার বুকে লুকিয়েছি,
অনামিকা, তুমি তা মোটেও জানতে পারলেনা!


মনের এক সুরক্ষিত কুঠরিতে রাখা তোমার সে লুকানো ঐশ্বর্য
আমি একান্ত গোপনে, নির্জনে বসে মাঝে মাঝে খুলে খুলে দেখি।
মনের ভেতরে উথাল পাতাল করা কথাগুলো তোমায় বলবো বলে
সাবধানে গুছিযে রাখি। কিন্তু তোমার সামনে গেলেই সেসব কথা
কর্পূরের মত বাতাসে উবে যায়। হায় অনামিকা তুমি বুঝলেনা!


তোমাকে পাবার জন্য এই অকবিও একদিন কবি হতে চেয়েছিলাম,
পরিশুদ্ধ হবার জন্য যেটুকু দগ্ধ হওয়া প্রয়োজন, হতে চেয়েছিলাম।
শান্তির ললিত বাণী শোনার জন্য পাখির কাছে গিয়েছিলাম, প্রেমের
ছলাকলা শেখার জন্য কতোবার ছুটে গিয়েছিলাম স্রোতস্বিনী্র কাছে!
তবু অনামিকা, এ মূক মুখে কোন কথাই ফুটলোনা!


জানি, চিরদিন তুমি অধরাই রয়ে যাবে। তুমি দেখবে বলে
হুটহাট করে কতকিছু চমক লাগানো স্টান্ট করে ফেললাম, অথচ
কোন কিছুই তুমি দেখলেনা। দেবীর আসনে বসে আজীবন শুধু পূজ্য
থেকে গেলে! স্মিত হাসি হেসে কেবলই ঝড় তুলে গেলে, আর ঝড় শেষে
আমার অব্যক্ত আবেগ উৎপাটিত বৃক্ষের মত ভূতলে আছড়ে পড়লো!


পাদটীকাঃ  'প্রবঞ্চনা বিলাস' নামে আমার গতকালের কবিতায় কিছু পাঠকের মন্তব্য আমাকে আজকের কবিতাটা লিখতে অনুপ্রাণিত করেছে। কেউ বলেছেন, কবিতার 'বর্ণনায় আবেগ অনেক সংযত, আরেকজন বলেছেন, 'ঐ যুবকটিই যদি তা নিয়ে কবিতা লিখতো, তীব্র প্যাশন নিয়ে লিখতো, কেমন লিখতো?' যে 'যুবক' এর কথা ভেবে কবিতাটি লিখেছি, সেও কিছু বলেছে। সবার কথা মনে রেখেই আমার আজকের এ প্রয়াস।


ঢাকা
০৮ নভেম্বর ২০১৪
কপিরাইট সংরক্ষিত।