কেমন আছো—কাকে বলবো এই প্রশ্নটা?  
সবাই তো দিব্যি বেঁচে থাকার অভিনয়ে ব্যস্ত,  
ভালো থাকার মুখোশ পরে হাঁটছে  
দিশেহারা প্রহরগুলোর ওপর দিয়ে।  
তারা জিজ্ঞেস করে, “ভালো তো?”  
আমি বলি, “হ্যাঁ”—  
কেননা না বলার সময় নেই কারও হাতে।

কেউ কেউ তো মানুষ! মানুষের মতো আচরণ
আবার কেউ কেউ, মানুষের জিন্দা মুখোশ পড়া
কারো কারো চরিত্রের মুখোশের আড়ালে ডাকা
তবুও কেউ বলেনা মুখোশধারী বেইমান!

তুমি কথা রাখো না—  
এই অভিমান কাকে শোনাই?  
যে যার বোঝা বইছে,  
সবার কাঁধে কিছু না বলা কথা,  
অপ্রকাশিত দীর্ঘশ্বাসের পাহাড়।  
একটা অতীত ঝুলে আছে  
নীরবতার মেঘের নিচে,  
যেখানে কেউ কেউ শুধু বেঁচে আছে ভুলে থাকার ভান করে।

তুমি কি জানো, মনে রাখার কী যন্ত্রণা?  
যখন সবাই কিছুকে ভুলে যাওয়া বেছে নেয়  
সুখী থাকার নামে,  
আমি তখনও রোজ সন্ধ্যায় তোমার জন্য  
এক কাপ চা রাখি মনের বারান্দায়।

তুমি কি সত্যিই জানো—হাত ধরা মানে কী?  
এ শহরে আজকাল কেউ কাউকে ছুঁতে ভয় পায়,  
ছোঁয়া মানেই দায়, মানে জবাবদিহি।  
তাই সবাই শুধু দেখে, অনুভব করে না,  
আছে, কিন্তু থাকে না।

স্বপ্নগুলো—  
তোমার দেওয়া স্বপ্ন,  
সেগুলো আজকাল ক্লান্ত,  
মুঠোয় ধরে রাখা যায় না,  
ছুটে যেতে চায় ছাদের কিনারায়,  
তারপর...  
একটা নিঃশব্দ ঝাঁপ।

তুমি কি শুনতে পাও?  
আমি ডাকি, নরম করে, ধীরে ধীরে।  
এখানে কেউ শোনে না আর—  
সবাই নিজের কোলাহলে ডুবে।

তবুও...  
আমি দাঁড়িয়ে থাকি।  
যখন সবাই যাবার জন্য প্রস্তুত,  
আমি থেমে যাই তোমার সম্ভাবনায়।

তুমি যদি একদিন ফিরে আসো,  
এই জনশূন্য ভালোবাসার শহরে,  
তোমার জন্য আমি অপেক্ষা করে যাবো—  
এক হাতে পুড়ে যাওয়া দিন,  
অন্য হাতে বেঁচে থাকা স্বপ্ন নিয়ে।

রুপালী ফ্রেমের চোখে তাকিয়ে দেখো,  
একটা মুখ—  
তোমার কথার অপেক্ষায় রোজ পাথরে দাঁড়িয়ে থাকে।  
হয়তো আমি, হয়তো আমি নই।  
তবে আমার ভিতরের কেউ  
তোমাকে আজও ভালোবাসে—নীরব, নিঃশব্দ, নতজানু।

"মুখোশের আড়ালে"_ মোহাম্মদ শেখ কামালউদ্দিন স্মরণ