আমি মানুষ—এই সমাজে আজ সেটাই সবচেয়ে বড় অপরাধ।
কারণ এখানে মানুষরা নয়, মুখোশেরা চলে রাজত্ব করে।
ভেবেছিলাম মানবতা একটা শিক্ষা,
আজ দেখছি—ওটা স্রেফ একটা লুকানো ঠাকুরঘর।
ভবিষ্যতের ভরসা, বাবা'র বয়সী এক বৃদ্ধ,
যার শরীরকে উলঙ্গ করে মারছে যারা,
তারা কি সত্যিই মানুষ?
নাকি সভ্যতার ছদ্মবেশে লুকানো হিংস্র কোনো পশু?
বিধবা নারীর গায়ে যারা ছিঁড়ে ফেলে সম্ভ্রমের শেষ চাদর,
তাদের রক্তে বয়ে চলে কীসের ঘৃণা?
তাদের জন্ম কেমন ঘরে, কোন ইশ্বর তাদের সৃষ্টি করে?
যারা দিনে-দুপুরে রাস্তায় রক্ত মাখে নিরীহ শরীরে,
যারা ভিডিও তোলে, অথচ কেউ ছুটে আসে না বাঁচাতে—
তারা কি আমাদের প্রতিবেশী?
নাকি পাথরে তৈরি একেকটা মূর্তি, ভেতরে শূন্যতা?
আমার বোন এখন অজানা ভয় নিয়ে জেগে থাকে রাতভর,
আমার ভাই হাসে, অথচ জানে—
এই হাসির দাম হয়তো গুলি, হয়তো ছুরি, হয়তো লাশের স্তূপ।
দেশের দিগন্তে আগুন—
কিন্তু কেউ দেখে না।
সবাই নিজের মোবাইলে ব্যস্ত, নিজের নিরাপত্তায় মোড়া।
মানুষের মুখে মাস্ক, কিন্তু বিবেকও কি মাস্কে ঢাকা?
আমি কিছু চিনি না—না রাজনীতি, না ধর্মের ঢাক বাজানো শব্দ।
আমি শুধু জানি—
জীবন মানে প্রশ্ন করা,
জীবন মানে দাঁড়িয়ে থাকা অন্যায়ের বিপক্ষে।
ক্ষমা করতে পারি—
কিন্তু তার আগে জানতে চাই,
কেন বারবার আমার বিশ্বাস খুন হয়?
কেন বিচার হয় না,
আর একটা ভুলে, একটা পরিবার চিরতরে নিঃস্ব হয়ে যায়?
আমরা মানুষ চিনতে ভুল করেছি।
আমরা মুখ দেখেছি, মন দেখিনি।
আমরা হাত দেখেছি, হৃদয় না।
এখন তাই, যাদের বিবেক নেই—
তারা শাসন করছে আমাদের ভাগ্যরেখা।
প্রকৃতি কাঁদে—
আর আমাদের চোখে নেই জল।
শুধু আঙুল তোলে, পোস্ট দেয়, চুপ থাকে—
তবু প্রতিবাদ করে না।
এই চুপচাপ প্রজন্মই
ভবিষ্যতের সবচেয়ে ভয়ংকর অভিশাপ।
তবুও আমি চিৎকার করে বলি—
আমি মানুষ, তাই প্রশ্ন করি!
আমি জীবিত, তাই রুখে দাঁড়াই!
তোমরা যতোই পোড়াও, আমি জ্বলবো না—আমি আলো হয়ে ফিরব!
কারণ, সত্য কখনো মরে না—শুধু সময় নেয় জেগে উঠতে।
"আমি মানুষ বলেই প্রশ্ন করি"_ মোহাম্মদ শেখ কামালউদ্দিন স্মরণ