অনেকবার চেষ্টা করেছি, তোমাকে বলবো, ভালোবাসি
মনে জমানো হাজারো কথার, বৃষ্টি নেমে আসে মুহূর্তে
তোমার সামনাসামনি হলে, এতটা সাহস করতে পারিনি
ভালোবাসি বলার পরিবর্তে, বলে ফেলি, ভালো আছি।


তোমাকে যখন দেখি, তখন শব্দ না করে, সুবোধ ছেলের মতোই হাসি
অনেকবার, চোখের ভাষায় বোঝানোর চেষ্টা করেছি, তোমাকে ভালোবাসি
আমার ভালোবাসা হয়তো তুমি বুঝতে পারোনি,কিন্তু কিছু একটা ঘটবে!
কি ঘটবে? হঠাৎ তুমি এসে,আমায় বলবে ভালোবাসি? না, তা হয় কি করে?


অনেকদিন পর, তুমি আসলে,দু’চোখে তোমার, জন্মের হতাশা দেখলাম
আমি অকপটে বুঝতে পারলাম,ইট-কাঠ পাথরের শহরে, তুমি সুখে নেই।
কথা হলো তোমার সাথে অনেক সময়, প্রতিশ্রুতিতে তুমি বন্ধু হতে চাও
প্রেম পিপাসায়, পিপাসিত মন, দুধের বদলে পানিতে মিশতে চাওয়ার মতোই ।


বন্ধুত্বের বন্ধনে, স্বাগত জানালাম। তারপর একদিন, গ্রীন অরণ্যে সারাবেলা
দীর্ঘ সময়, তোমার-আমার, অতিবাহিত জীবনযাত্রার, শ্বাসরুদ্ধ আলোচনা
এক পর্যায়, প্রেমের সম্পর্কে উঁকি-ঝুঁকি,অবশেষে ভালোবাসি, বলতে পেরেছি তোমায়
বন্ধুত্বের সম্পর্ক গভীর হলো এবং অবলীলায় ভালোবাসা-বাসী হয়ে গেল মনের ঠিকানায়।


বন্ধুত্বের বাহানায়, হয়ে গেলাম অভিভক্ত প্রেমিক! এখন কেবলেই প্রেমশুধায় বিভোর
বাঞ্ছনা-গঞ্জনা, আনন্দ-উল্লাস, এ কেবল প্রেমের অলংকার হিসেবে গ্রহণ করেছি আমি
বিসর্টে প্রেমিক, দিশেহারাজি, ধড়ফড় করে বুক, তবু শান্তি মিলে, প্রেমঅবলোকে আসোক
দেশাত্মে মন,অকপটে খুঁজছে তোমায়,ভাবনার রোশনলে প্রেমক্রিয়া নিঃশ্বাসের, গনত্ব বাড়ায়।


২৯ শে জানুয়ারি, নিমন্ত্রণ পেলাম, তোমার বাসায়। আমন্ত্রিত হয়ে অপেক্ষার প্রহর গুনছি
২৫ শে মার্চ রাতে, দেশের যেসকল বুদ্ধিজীবীদেরকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল,
তারা সকলেই, শুয়ে আছে তোমার বাসার পাশেই। তাদের জন্যই জায়গাটার নামকরণ হয়েছে বুদ্ধিজীবী
বুদ্ধিজীবীর সাথেই বর্ধন বাড়ি,আর এখানেই সাত তলা প্লটে তোমার সংসারের আশ্রয়স্থল।


সোমবার, বিকাল তিনটায় পৌছালাম তোমার ফ্ল্যাটে। সেখানে তোমার স্বামী সন্তান নিয়ে বসবাস করো
বাণিজ্যিক কারণে তোমার স্বামী দেশের বাইরে, আর অপরদিকে প্রেমিক হিসেবে তোমার ঘরে আমি
প্রেম মানেনা বাধা, এই কথাটা অনেকবার শুনেছি, কিন্তু কাকতালীয়ভাবে আমার সাথে ঘটে যাবে ভাবিনি
সূর্যস্ত হওয়ার আগেই, তোমায় নিয়ে ছাদে প্রবেশ করতেই, অবাক করার মত একটি ঘটনা ঘটে গেল।


ইট-কাঠ পাথরের নগরীতে দাঁড় কাকের মেলা সচরাচর দেখা যায় না। বিস্ময়কর বিষয় হলো;
তোমাদের বাসার ছাদে উঠতেই, শত শত কাকের  উপস্থিতি দেখতে পেলাম। তবে লোকে বলে,কাক
বাড়ির বারান্দায় বসে জোরে জোরে ডাকতে থাকলে,বাড়িতে অতিথি আগমন হতে চলেছে মনে পড়ার
পর, আমার ভেতরে কেমন জানি একটা অস্থিরতা কাজ করছে,আবার কোন অতিথি আসবে বাড়িতে?


কিছুক্ষণের মধ্যেই গুড, গুডে অন্ধকার। সারা শহর জুড়ে নিয়ন আলো জ্বলে উঠলো।এখন গভীর রাত
মানব-মানবী ঘুমের শহরে ব্যস্ত,আমি শুয়ে থেকেও জেগে আছি,আমার পাশেই, শুয়ে আছে অন্যের বিবাহিত স্ত্রী। আমার চোখে ঘুম নেই, দেহের ভিতর বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে ঘুম কি করে থাকে?
মনের উত্তেজনা বেড়ে গেল। কাম-লালসা আষ্টেপৃষ্টে চেপে ধরলো আমায়। এখন আমি মাতাল।পাগল!


কিছু সময়ের মধ্যেই তোমার নাক ডাকার শব্দ পেলাম। তুমি হয়তো ঘুমাচ্ছো। শুয়া থেকে উঠে, আমি তোমার পাশেই বসে রইলাম। ২৫ শে মার্চ, কালোরাত্রীর কথা মনে পড়লো। শহীদ বুদ্ধিজীবীরা দেশকে ভালোবেসে নিজেদের জীবন উৎসর্গ করে ছিলো। তারা এখন আমার পাশেই বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে শুয়ে আছে । আমিও বিসর্জন দিব ভালোবাসা। শত কিছুর পরেও সে অন্যের স্ত্রী। তার গায়ে স্পর্শ করা হবে ব্যভিচার। এটা নিঃসন্দেহে পরকীয়া।


তবে, প্রেম-ভালবাসা, মানে না কোন নিয়ম-কানুন। তাদের থাকে না কোন জাতী-ধর্ম।
কথায় আছে, প্রেমেই স্বর্গ-প্রেমই নরক। আমি স্বর্গ পেয়েও নরকে যাব, এটা আমার প্রতিশ্রুতি।
কিন্তু পরকীয়া প্রেমের ডায়েরিতে তুমিই বিজয়ী। একই বিছানায় শুয়ে থাকা, দুটি নর-নারীর ভেতরে
কাম বাসনার তুফান বইছে। অথচ আমরা কেউই সেই তুফানে ভেঙ্গে পরিনি? নিঃসন্দেহে এটা রূপকথার গল্প।


গভীর রাতে, ভিন্ন পুরুষের সাথে কোনো নারী শুয়ে থাকা অপরাধবোধের কার্য।,লোকে যদি স্বচক্ষে দেখতে পেত,মুহূর্তেই সারা শহর জুড়ে ছিঃ ছিঃ শব্দ আর অপবাদ ছড়িয়ে পড়তো। এর জের ধরে কানা-কানি, হানাহানিও হয়তো হয়ে যেত। আগুনের তাপে মোম গলে পড়বেনা, কে বিশ্বাস করবে? তবে সত্যিই যদি কোন মোম, আগুনের তাপে গলে না পড়ে? তাহলে তো এই ঘটনা, 'গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ডে রেকর্ডস হতো। হয়তো তার নাম দেওয়া হতো “বিজয়ীতা পরকীয়া প্রেমের ডায়েরি”।

ভোর হল। মুহূর্তেই সূর্যের আলোয় সাড়া শহর আলোকিত হয়ে গেল। তুমি বললে, আমি চলে গেলেও
তবুও থেকে যাবে তুমি; আমার সমস্ত না থাকা জুড়ে,আমার সকল ভাল্লাগেনা'র অসুখে কিংবা বুকের ভেতর লাগতে থাকা বিষণ্ণ দুপুরে। প্রিয়বন্ধু, সাথী আমার। আমি তবুও থেকে যাব;আকাশের নীলে, সূর্যাস্তের লালে  কিংবা সন্ধ্যার আবছা অন্ধকারে। তবুও থেকে যাব; হঠাৎ ডেকে ওঠা পাখিটির মতোন আড়ালে আবডালে!


বিজয়ীতা পরকীয়া প্রেমের ডায়েরি-
মোহাম্মদ শেখ কামালউদ্দিন স্মরণ