সকল তারীফ পাওয়ার যোগ্য
মহান আল্লাহ্ পাকে
সৃষ্টি করে মাটির আদম
ঈমান দানেন তাকে।
প্রাণহীন দেহে ফুঁৎকার করেন
নিজ হুকুমে রুহ
কঠিন প্লাবন হতে বাঁচান
তিনি নবী নুহ।
গোস্বার যখন নির্দেশ পেল
তাঁহার মাখলুক হাওয়া
"আদ সম্প্রদায়" ধ্বংস করে
বায়ুর ক্ষুব্ধ ধাওয়া।


যার করুণা প্রকাশ হলে
ইব্রাহিমের আগুন
ফুল কাননে রুপান্তর হয়,
বয় বসন্ত ফাগুন।
যিনি রাতের শেষ প্রহরে
নবী লুতের জাতি
জমিন সহ আছাড় মারেন
নিভান জীবন বাতি।
প্রভুর দিকে শত্রু নমরুদ
তির ছুঁড়ে হায় মারে
ক্ষুদ্র মশায় তার জীবনটা
সাঙ্গ করে ছাড়ে।


যাহার শত্রু ফেরাউন দল
জলে ডুবে মরে
শক্ত পাথর হতে যিনি
উটনী বাহির করে।
তিনি যখন দয়া করছেন
দাঊদ নবীর হাতে
কঠিন লোহা নরম হয় গো
ছোঁয়ার সাথে সাথে।
বিশাল এক রাজত্ব দেন
সুলাইমানের হাতে
দেও-দানব সব অনুগত
থাকতো দিবা রাতে।


আইয়ুব নবীর শরীর থেকে
পোকায় আহার করে
ইউনুস নবী মাঝ দরিয়ায়
মাছের লোকমায় পরে।
জাকারিয়া নবীর মাথায়
করাত চেঁড়া করান
কুদরতি শান আরেকজনকে
শাহী মুকুট পরান।
রাজাধিরাজ ইচ্ছে মতো
সকল কর্ম সারেন
এই পৃথিবী এক মুহূর্তে
ধ্বংস করতে পারেন।


সকল রাজ্যের একক রাজা
তাঁর রাজত্বই সাজে
বাঁধা দেওয়ার মতো কেউ নাই
প্রভুর কোন কাজে।
কাউকে দেন হায় ধনভাণ্ডার
রাখেন হাজার সুখে
আবার কাউকে রুগ্ন করে
ঘোরান শুঁকনো মুখে।
কাউকে দেন যে শতো থলে
সোনা-দানা ভরে
আবার কেউ এক রুটির জন্য
প্রাণ বিলিয়ে মরে।


শত সম্মান গৌরব নিয়ে
শাহী মসনদেতে
কেউ তো আবার বসে আছে
ছেঁড়া চাটাই পেতে।
তিনি কাউকে দামী পোশাক
পরান মাসে মাসে
আবার কেউ তো বস্ত্রহীন রয়
শুয়ে চুলার পাশে।
কাউকে দেন হায় মখমল শয্যা
রয় খচিত জরি
আবার কেহ লাঞ্ছনাতে
মাটিতে রয় পড়ি।


পলকেই দেন পৃথিবীকে
উলটপালট করে
শক্তিহীন গো সকল মানুষ
তার হুকুমের পরে।
উড়ন্ত ওই পাখির মুখে
মাছ দেন তাজা তাজা
মানুষকে দেন ধনসম্পত্তি
করেন তিনিই রাজা।
পিতা ছাড়া তিনি সন্তান
করতে পারেন সৃষ্টি
দোলনায় থেকে শিশুর মুখে
ফোঁটান কথার বৃষ্টি।


শতক বছর আগের মৃত্যুর
জীবন ফের্ দান'কারী
আল্লাহ্ ছাড়া ভিন্ন কেউ কি
এ কাজ করতে পারি?
মাটি থেকে বাদশা তিনি
তৈরি করেন কতো
তারকাকে সয়তানের দিক
ছোঁড়েন গুলির মতো।
তার রাজত্বের মালিকানা
আর কারো নয় কভু
কথা ও সুর ভিন্ন রকম
বলেন যখন প্রভু।


গ্রন্থঃ পান্দেনামা (ফারসি)
মুল লেখকঃ আল্লামা শায়েখ ফরীদ উদ্দীন আত্তর (রহঃ)
অনুবাদঃ আরিফ সরদার
স্বরবৃত্ত ছন্দঃ ৪+৪+৪+২
তারিখঃ ৩০/১০/২০২২ইং
সন্ধ্যাঃ ০৬:৩৫ মিনিট।