(০১)জ্যোৎস্না ঢাকা মেঘ


কেন বারবার আসে মনে সংশয়-ভীতি
কেন মধুময় বন্ধন অসময়ে অকারণে হয়ে যায় ইতি?
কেন নিশির নিস্তব্ধতায় চাঁদের জ্যোৎস্নায় ঢাকা পড়ে মেঘ?
কেন পাখির কোলাহলে শ্রুতিমধুর আওয়াজে পাল্টে যায় গতিবেগ?


কেন বসন্তের পল্লব ঝলসে দেয় চৈত্রের তীব্র খরা?
কেন বিরহের ছটা জ্বালিয়ে দেয় সবুজ এই বসুন্ধরা?
কেন বারবার লুকিয়ে যায় সত্য মিথ্যার বেড়াজালে?
কেন ঘর ভেঙে যাবার ভয় আমার ঘর বাঁধার প্রাক্কালে?


কেন চিরকুটে ভালোবাসা অপর প্রান্তে বিশ্বাসঘাতকতা?
কেন বিশ্বাসের আলো জ্বেলে শুধু হয়ে যায় অন্যমনস্কতা?
আমি বুঝতে পারিনি কেন এমন হলো আজ আমার সাথে,
ভাবিনি এমন কিছু এই জীবনে আমার হবে পেতে।


তুমি চাইলে মেঘ সরিয়ে দিতে পারো আসবে জ্যোৎস্নাধারা,
আবার পাখির গুঞ্জনে ভরে দিতে পারো আমার হৃদয়পাড়া।
যদি তুমি চাও শুধিতে নিজে ভাঙতে কালো অতীত তোমার জীবনের,
বাকি থাকে না তোমার সাথে আর দূরত্ব আজ মনের বন্ধনের।


আবার জ্যোৎস্না ফুটে উঠুক যেখানে থাকবে না সন্দেহের কালো ছায়া,
যেখানে থাকবে ফুলের সুরভি আর পাখিদের গুঞ্জনের মায়া।
রংধনুর সাত রঙে রঙিন হবে দুটি জীবন হবে পরিপাটি,
তখন চাঁদের আলো ছুঁয়ে যাবে পায়ের নিচের মাটি।


বলো তুমি কী অমানিশার ঘোর আঁধারে ভালোবাসবে অন্ধের মতো,
নাকি একটু সুযোগ দিবে দেখাবো ভালোবাসার উত্তাল ঢেউ তরঙ্গ প্রাণে কত!
ভুলে যেওনা যেমন ভোলে না শৈশবের শেখা স্বরলিপি
হারিয়ে যেওনা আমি নিঃশব্দে মরবো নিরালা নির্জনে চুপিচুপি।


তারিখঃ ০৯/০৬/২০২২ইং
সকালঃ ০৯:৪৬ মিনিট।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
(০২)তোমার সাথে ষাট দিন


একটা মিষ্টি দুপুরে তোমার আমার সাক্ষাৎ তা-ও বাস্তবে নয় স্বপ্নে,
হাতে হাত রেখেছিলাম ভালোবাসার অধ্যায় তখন থেকে শুরু।
একটু কাছাকাছি আসলাম প্রণয়ের অপেক্ষায় প্রতীক্ষিত দুটি হৃদয়,
তোমার সাথে অতিক্রান্ত হলো এর মধ্যেই ষাট দিন, পূর্ণ দুই মাস।
প্রকৃতির রূপের মধ্যেও কিছুটা পরিবর্তন এসেছে, রঙের মধ্যেও,
তখন আম কাঁঠালের মৌ-মৌ গন্ধে চারিদিক মুখরিত হওয়া সবেমাত্র শুরু।


তুমি আসলে তখন গুনগুনিয়ে গান গাইতে গাইতে,
তোমার সুরের মূর্ছনায় হারিয়ে ফেললাম নিজেকে।
কখন? কীভাবে আমি নিজেও বুঝতে পারিনি;


সত্যি বলছি প্রেয়সী!
একটা আলোকিত, রোমাঞ্চকর ক্ষণ ছিল সেটা,
চির স্মরণীয় হয়ে থাকবে আমার জীবনের পাতায়।
তোমার আগমন তো কৃষ্ণচূড়ার রাঙা ফুলের চাকচিক্যের চেয়েও মোহনীয় ছিল।
হাজারো তারাদের মোহরাঙ্কিত ছিল তোমার প্রতি পরতে পরতে।


তোমার বদনেও ছিল পূর্ণ শশী, আমি ছিলাম অমানিশার ঘোরে,
চিত্তে সেদিন নব অনুভূতির সুতোয় গেঁথেছিলাম একটি মালা।
আঙুলের অগ্রভাগে নকশা এঁকেছি ধুধু বালুময় প্রান্ত মরুভূমির বুকে।


এর মধ্যে অতিক্রম করেছি;
চৌদ্দশত চল্লিশ ঘণ্টা, ছিয়াশি হাজার চারশত মিনিট, একান্ন লক্ষ চুরাশি হাজার সেকেন্ড!
আমরা পৌঁছে গেছি শ্রাবণে, জানো এখন চারিদিকে কত সুন্দর কদম ফুল ফুটেছে?
তোমার তো কদম ফুল অনেক ভালো লাগে তাই না? তুমি তো বলেছিলে।
কিছুদিন পরে নদীর দু'পাশে সাজবে মেঘের সাজে একেবারে পেঁজা তুলোর মতো করে, কাশফুলেরা,


তুমি এসো!
সেদিন বসবো বাস্তবে তুমি আর আমি, নদীর পাড়ে চোখের পাতায় রাখবো পুরোটা বিকাল।
নীল দিগন্তে সূর্য লুকানোর অন্তিম মুহূর্তে গোধূলির আবিরে মাখামাখি হবো দুজনেই।
পাখিরা ফিরবে নীড়ে সারি সারিতে উড়ে,
আমরাও ফিরবো চন্দ্রিমা রাতের অপেক্ষায় দু’টি হাত একসাথে ধরে।


তারিখঃ ২৬/০৬/২০২২ইং
বিকালঃ ০৪:২৮ মিনিট।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
(০৩)তোমার উষ্ণ সংকেত


তুমি আমার নিকট চাইতেই পারো
কিন্তু আমি চাইতে পারি না লাজুকতায়
তবে তুমি যেমনটি চাও প্রিয়
আমিও থাকি তেমনই কিছু পাওয়ার প্রতীক্ষায়!


অনেকে চাঁদ এনে দিতে চায়
দিতে চায় মঙ্গল গ্রহের আবাসন হয়তো তোমাকে
কিন্তু দিয়েছে কী একটু মধুময় প্রীতি?
ভালোবাসা হৃদয়ের আলোড়ন আর
মিথ্যা আশ্বাস কেবল ব্যাদনাময় স্মৃতি।


মিথ্যা প্রলোভনে পরে হাসিগুলো ঝড়িয়ে ফেলোনা
চৈত্রের পত্র-পল্লবের মতো।
আবার ভালোবাসা দাবানলে জ্বলে
নিজেকে করা হয় জ্বলন্ত বারুদে পরিনত।


জ্যোৎস্না ভরা আকাশ, সেই নীল দিগন্তের সীমানা
মাঠ আর ফসলের ক্ষেত
আলোয় আধারে নিকটে কিংবা অদূরে কেবলই
সবকিছুতে পেয়েছি প্রিয় তোমার উষ্ণ সংকেত।


উষ্ণতা খুঁজে শীতল প্রাণ নামে অগ্নি দরিয়ায়
শীতলতা কোথায় ছিটাফোঁটাও নেই যে তথায়।
হাহাকার শুনেছি কেবলই নিজের মাঝে আমি
শুধু উষ্ণতা না বিরহ-বেদনে এবার প্রাণে মরি হায়।


গোধুলীর আবিরে রাঙানো হলো দর্শনার্থীদের চোখ
আর তুষের অনল প্রজ্জ্বলিত আমার তপ্ত বুক।
অগোছালো ভাষায় লিখছি তপ্ত হৃদের কথা
ঘুচে যাওয়ার এ দহন কঠিন হাতের ব্যাথা।


তারিখঃ ০৩/০৪/২০২২ইং
বিকালঃ ০৩:৩০ মিনিট,
আলীপুর, ফরিদপুর।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
(০৪)সত্যিকারের ভালোবাসা যেদিন হবে সবল


একটি ফোঁটা ভালোবাসা যদি হয়
খাঁটি নির্ভেজাল ও পবিত্র!
বিশাল ফুলবাগান হতে তা হবে
হাজারো গুণ অধিক নিচিত্র!
এক বিশাল সমুদ্র হতে উচ্ছসিত তার
তরঙ্গমালা আছড়ে পরবে তীব্র গতিতে,
আকাশের চেয়েও হবে সুবিশাল,
বাতাসের চেয়েও গতিশীল হবে তাতে!
ভালোবাসা শুধু ছুঁয়ে দেখার নাম নয়,
হৃদয়ে অনুভব করার জন্য,
হাজারো মিল যেখানে একাকার হয়ে যায়,
প্রেমময় হৃদয় বোঝে বিষয়টি কী ভিন্ন!
সত্যিকার ভালোবাসা কোন দেহ খুঁজে ফেরে না,
রূপের মোহে পড়ে না মায়ায়।
ক্লান্তি আসে না যে ভালোবাসায়,
ভালোবেসে যায় আজীবন শুধু প্রাপ্তির আশায়।
ক্ষণকাল ভালোবাসায় ডুবন্ত সেই শুধু
মধু লুটে নিবে বলে,
চাহিদা নয় শুধু মনের মিলনে
ভালোবাসা যায় হাজার বছর চলে।
আকাশ বাতাস মুখরিত সব
সেই পবিত্র ভালোবাসায়,
হাজারো ধিক্কার ওসব প্রেমিকের
যাদের হৃদয় বন্ধ ভোগের তালায়।
অমানিশার ঘোর আঁধার নেমে আসে
সূর্য যখন লুকায় অন্তরালে,
জীবনে দুর্ভোগ নেমে আসে দেখবে
সেই ফুলেল সুশোভিত ভালোবাসার অভাবের ফলে।
ফুটিয়ে তোলে ফুল আনে জ্যোৎস্না
আলো করে ঝলমল,
এ ধরার আঙিনায় সত্যিকারের ভালোবাসা
যেদিন হবে সবল।


তারিখঃ ১৬/০৫/২০২২ইং
দুপুরঃ ১২:৪০ মিনিট।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
(০৫)এক বসন্তের ক্ষণে


একদিন এই বসন্তের রূপ ছিল ভিন্ন,
সবকিছুই যেন অন্যরকম ছিল আমার।
সূর্যের তেজ ছিল অনেকটা মিষ্টি,
বড় রোমাঞ্চকর মুহূর্ত ছিল গোধূলির লগ্নে,
প্রভাতের স্নিগ্ধ আলো চারিদিকে ছড়িয়ে পরার দৃশ্য!


সেদিন এসেছিলাম অপেক্ষার প্রহর শেষ করে,
অনেক ফুলের সাজানো এক বাগানে।
পাখিদের কিচিরমিচির আওয়াজের সমারোহে,
প্রজাপতির ডানায় কত বাহারি রঙের আলপনা,
চারিদিকে হাজারো সোভার আনাগোনায়!


আবার এসেছি শরতে মেঘের পেঁজা তুলো উড়িয়ে,
নদীর পাড় ঘেঁষে কাশফুলের সাদা চাদর জরিয়ে।
নদীর জলে ভিজে আসা যেন স্নিগ্ধ কোমল হাওয়া,
শিহরণ জেগে উঠে আমার অঙ্গ হৃদয় জুড়ে,
সেখানে ছিল শুধু তোমায় আমার চাওয়া!


খুঁজেছিলাম বৃষ্টি ভেজা শরীরে একটু উষ্ণতা
তোমার আঁচলে লুকাতে করেছি ব্যার্থ চেষ্টা।
শীতের কষ্টে খুঁজিনি আমি এক টুকরো গরম কাপড়,
তুমিহীন একাই আমি কেঁপেছি থরথর,
হয়নি তবু তোমার আগমন এই হৃদয়ের নীড়ে!


খুঁজেছি বারংবার এই সুরভির টানে দিগ-দিগন্তে,
ব্যাকুল মন চায় অনেকটা নিকট থেকে জানতে।
তোমার সাথে কেটেছে হয়তো কিছুক্ষণ সময়,
ওই বসন্ত কেন আর আসে না আমার জীবনে,
তোমার সাথে পরিচয় হয়েছিল যেই বসন্তের ক্ষনে।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
(০৬)তোমাতে চিরকুট


তোমাকে আসিতে বলিয়াছি বারংবার
তবু যে তুমি আসোনি;
চেয়েছিলাম তোমার পথ ও প্রান্তে
তুমি তো ভালোবাসোনি!


চাহিবার মতন কী আছে রতন
তুমি ভীন প্রেয়সী
তোমাকে জানিয়াছি এই বুক আকাশে
প্রজ্জ্বলিত এক শশী।


তুমি ছিলে হাজারো তারকার ভীড়ে
সু-উজ্জ্বল চন্দ্রিমা
জানো না তুমি কতো যে অনন্যা
ছিল না তোমার উপমা।


তমিস্র নিশিভবে তোমাকে অনুভবে
কাটিয়াছে আমার প্রহর
তুমি আসো নি তাই আঁধার নিশীথের
হয়নি আজো ভোর।


তবু অপেক্ষায় আজো প্রিয় হে আমার
হয়তো তুমি আসিবে
হয়তো বুঝিবে আমারে, আমার মনন
হয়তো ভালোবাসিবে!


চিরন্তন চির সত্য তুমি ছিলে
হৃদয়ের অনুভবে
আমি শান্ত, নির্মল হৃদয় আমার
যখন তোমায় পাবে।


বেকারার হিয়া তোমাকে নিয়া
সান্ত্বনার বাণী খোঁজে
তোমাকেই ভাবিয়া হৃদয়ে আমার ওগো
প্রশান্তি দেয় কি যে!


কতবার লিখিয়াছি তোমাতে চিরকুট
পৌঁছায় নাহি কী তবে
হয়তো চিঠি খুলিবে একদিন
সেই আশে চিঠি লিখে যাই বারেবারে।


তারিখঃ ০৯-০৪-২০২২ইং
রাতঃ ১০:২৫ মিনিট।
শংকরপাশা, নগরকান্দা, ফরিদপুর।