আমরা এখনো বাস করি পথে, বছরের ছয় ঋতুতে
কাদার বিছানায় রাতের গল্প, অতি সাহসী ও ভীতুতে।
অনিশ্চয়তার মুখে তুড়ি মারি, প্রতিদিন আমরা সাহসী
নিশ্চিহ্নতার কাঁধ কাঁধে হাঁটি, ক্ষণে উঠি ক্ষণে বসি।


বংশ প্রথায় আমরা ঘুমাই, ইট পাথরের বালিশে
নষ্ট করি না যুদ্ধের ক্ষণ, বৃথা অভিযোগ-নালিশে।
ডাস্টবিন থেকে ডাস্টবিনে চলে, কুকুর, মানুষ ও খাদ্যে
বিশ্বযুদ্ধ - ঝিঁঝি পোকা, ব্যাঙ, বাদুড়ের রণ-বাদ্যে।  


নালা নর্দমায় কাগজ কুড়ায়, গায়ে লাগে ধুলো কাদা
সারা গায়ে তাই আল্পনা আঁকা, কিছু কালো, লাল, সাদা।
ইচ্ছে হলেই সূর্য-দেবতা, গায়ের এ চামড়া পুড়ায়
বৃষ্টিরানী কখনো ভাসায়, কখনো শীতলে জুড়ায়।


সাহেব-বিবি অথবা তাদের অতি আদরের দুলাল
অতি অকারণে লাথি, ঘুষি, কিলে, এই দেহ করে লাল।
ক্ষুধা পেটে নিয়ে নিদ্রায় যায়, ক্ষুধা পেটে নিয়ে উঠি
শিক্ষা, চিকিত্সা, স্থায়ী বাসঘর - অলীক স্বপ্নে ছুটি।


শিয়াল কুকুরে সুযোগ পেলেই, বাড়ন্ত দেহ ধর্ষে
ঘৃনিত শরীর মহাসভ্যেরাও, ভোগ করে মহাহর্ষে।
চন্দ্র, সূর্য, তারকারা দেখে, যাই ঘটে পথপাশে
পথশিশু কবে পথমাতা হয়, নব পথশিশু আসে।


বিধাতার কাছে চাই নাকো জল, চাই না ক্ষুধার খাবার
শুধু চাই সে ধবংস করুক, গড়ুক পৃথিবী আবার।
যেথা বিধাতার এক সেনাপতি হবে আমাদের সাথী
আমরা সৈনিক, মেরে যাবো শুধু সভ্যতার মুখে লাথি।