রোবট


আমাদের কাচের কারখানায় টগবগ করা চুল্লির পাশে -
কাজ করে শিশু শ্রমিকেরা,
লোহার কারখানায় গলন্ত লোহার পাশে -
কাজ করে শ্রমিকেরা,
এখনো মাথায় করে দুই মণি বস্তা টানে-
দিন মজুর কুলিরা,
ম্যানহোলের ভেতরে ঢুকে প্রতিবছর প্রাণ হারায়-
অনেক নাম না জানা শ্রমিকেরা
এসব কাজ যদি রোবটেরা করে দেয়, সে তো ভালোই!


যদি আলিবাবা আর আমাজনের কারণে-
পৃথিবীর সব মুদির দোকান বন্ধ হয়ে যায়!
সব গাড়ি যদি চলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায়,
আর পৃথিবীর সব সম্পদ যদি চলে যায়
পাঁচ জন, দশ জন বা এক হাজার জন মানুষের হাতে,
আমরা বাকিরা করবটা কী?
না হয় আমরা;কাব্যসংগীত চিত্রকলা ক্রীড়া ও কৌতুক নিয়ে-
মধুর অবকাশই পালন করব!
কিন্তু আমাদের মুখের অন্নটা আসবে কোত্থেকে?
আর মানুষে মানুষে, জাতিতে জাতিতে যে,
হিংসা, বৈরিতা, হানাহানি, রণসজ্জা—
সেখানে গরিব রাষ্ট্রগুলোর গরিব মানুষদের কী হবে?


এখানে পশু নয়, মানুষ গাড়ি টানে।
লাখো লাখো মানুষ রিকশা চালায়।
পৃথিবীর বহু ঘরে এখনো বিদ্যুৎ নেই।
পৃথিবীর বহু ঘরে এখনো মোবাইল নেই।
পৃথিবীর বহু ঘরে এখনো ইন্টারনেট নেই।
পৃথিবীর বহু এলাকায় এখনো কৃষিই চালু হয়নি!
শিল্পবিপ্লব তো দূরের কথা!
সামান্য ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে-
পুরো পৃথিবীর হিমশিম অবস্থা।


এই রকম বৈষম্যময়, হানাহানি–হিংসায় উন্মত্ত পৃথিবীতে-
হে রোবট, তোমার আগমন হয়েছে!
তোমার আগমনকে মানুষ স্বাগত জানাবে কি জানাবে না?
তার ওপরে কিছুই নির্ভর করছে না,
কারণ মানুষ জানে, তুমি এসে গেছ।
আর এই নতুন বিশ্ব পরিস্থিতি মোকাবিলায়
মানুষকে, তার নিজস্ব অস্তিত্ব রক্ষায়
পরবর্তী প্রজন্মকে প্রস্তুত থাকতে হবে নির্দ্বিধায়।


_______________________________


পথিক
তারিখঃ ২৮/১০/২০
কলমাকান্দা, নেত্রকোণা।