ভোলে বাবা পার করে গা
ঐ দেখা যায় শিবের বাড়ি
বাঁক নিয়ে চল তাড়াতাড়ি
হর গৌরি পারবতি ফুল ফুটেছে নানা জাতি
সেই ফুল তুলব শিব সেবা করব
আহা সেই পুরানো স্মৃতি আজ আমাকে
মনের মাঝে আলোড়ন সৃষ্টি করে
বাঁকে করে ছেলে মেয়ে বুড়ো-বুড়ি সবাই চলেছে
বাবার মাথায় জল ঢালতে
গাঁয়ের এক প্রান্তে রয়েছে আমাদের শিবতলা
যেখানে সকাল সাঁজে পড়ত ছড়া ঝাঁট দুবেলা
বিকাল গড়ালে সন্ধ্যায় বাজত কাঁসর ঘণ্টা
সমস্ত ঘরে ঘরে শঙ্কের ধ্বনি মাতিয়ে তুলত পুরো গ্রামটা
তুলসতী তলায় মা প্রদীপ নিয়ে আরতি করত
এদিক পাখিপক্ষ সবাই নিজের কুলায়ে করত গুঞ্জন
সন্ধ্যা তারা আকাশের গায়ে চক চকিয়ে চিকচিক করে জলত
ঐ বড় একটা থালার মত চাঁদ গাঁছের ফাঁক দিয়ে উঁকি মারত
ধীরে ধীরে আকাশের মাঝে দাঁড়িয়ে সমস্ত দিক আলোয় ভরিয়ে দিত
তার মাঝে জোনাকির দল পুঞ্জ পুঞ্জ হয়ে তাদের আলোর ছটা দিতো
হালকলিম-চাঁপা-পুকুরের কলমির পাতায়- পাতায়
সেই গ্রামের মাধুর্য আজ ধীরে ধীরে ম্লান হতে চলেছে
যে শিব তলায় আমরা একদিন কত পুতুল নাচ- সংয়ের মেলা
গাজনের গান- মনসা ভাসান-বেহুলা লখিন্দরের কত কি শুনেছি দেখেছি
আজ এই নগরায়ন্নের ফলে পুরানো ঐতিহ্য লুপ্ত হতে চলেছে-
এখন সেই শিব তলা আছে কিন্তু তাহা ভগ্ন অবস্থায়
যার আশু সংস্কার হয় নি-
এই রকম কত শিব তলা গ্রামে গঞ্জে রয়েছে যেখানে
আমাদের পিতৃ-পিতামহের আনো গোনা ছিল অবাধ
তাহা আজ গ্রামের একধারে পোড়ো মন্দির হয়ে রয়ে গেছে