যদি হোতাম প্রধানমন্ত্রী একটি বারের মত
বাঙালিরে শিখিয়ে দিতাম কত ধানে চাল হয় কত!
দেশ চালানো শক্ত কাজ, কে বলেছে ভাই?
দেশের দায়িত্বটা একবার আমার কাঁধে চাই।
দেখবে তখন হাতে নিয়ে মোটা একখান ডান্ডা
চৌদ্দ কোটি পিটিয়ে করে দেব ঠান্ডা।
গৃহবন্দি করে রাখব বিরোধী সব লোক
ভয়ের চোটে আমার দিকে না তুলিবে চোখ।
হামলা-মামলা, জেল-জুলুম কিংবা ক্রসফায়ার
গুষ্ঠিশুদ্ধ নিশ্চিণ্হ করে দেব তাহার।
আন্দোলন করে যদি কোন শালার ব্যাটা
পাছা দিয়ে ঢুকিয়ে দেব দু,নালা ট্যাটা।
রাজপথে যাবে যখন আমার গাড়ী বহর
থরথরিয়ে কাঁপতে হবে পুরো ঢাকা শহর।
আষট্টি হাজার বর্গমাইলে প্রায় ষোল কোটি
যেন ছোট্ট একটি কুয়োর মধ্যে ঠাসাঠাসি পুটি।
জাল দিয়ে আধেক ছেকে ছাড়ব আটলান্টিক
তবেই যদি কুয়োর সাম্য রাখতে পারি ঠিক।
মোটা তাজা পুটিগুলো কেবল বাদ রেখে
যত সব চুনোপুটি ধরব জালে ছেঁকে।
পরিবার পরিকল্পনার ধার ধারিনা
এক ছেঁকাতেই সাত কোটি করে দেব ফানা।
গাড়ী চাপায় মারতে পারলে দিনে দশ বার
সোনার মেডেল পাবে চালক যত পারো মারো।
অপারেশন থিয়েটারে কোন ডাক্তার মিয়া
রোগী যদি মারতে পারে বিষের সুঁই দিয়া,
এইভাবে মেরে যাহার রেকর্ড হবে ভারি
সেই কেবল পাবে একখান মার্সিডিজ গাড়ী।
ধূমপায়ীদের মাঝে দেব বিশেষ উপহার
যে বেশি টানতে পারবে পুরুষ্কার তাহার।
পুলিশকে শিখিয়ে দেব, ''বন্দুকের নল দিয়া
ধরে ধরে মারবি ব্যাটা খোলা মাঠে নিয়া।"
এমনিভাবে মেরে মেরে পাঁচ বছর ধরে
জনসংখ্যা নিয়ে আসব দেড় কোটির পরে।
পূর্বসূরির দেয়া নাম যেথায় আছে যত
হাতুড়, শাবল দিয়ে তাহা ভাঙব অবিরত।
সেতু, কালভার্ট, নদী-বন্দর কিংবা বিমানঘাটি
সবখানেতেই চৌদ্দ পুরুষের ছবি দেব আটি।
ইতিহাস লেখে নেব নিজের মত করে,
"একাই দেশ স্বাধীন করেছি মুক্তিযুদ্ধ করে"।
পাঠ্য বইয়ের প্রথম পাতায় এঁকে নিজের ছবি
ছবির নিচে থাকবে লেখা, 'বাংলার মহান কবি'।
আমার গীতি গাইবে যে সব কাগজ কল
বলব, "অন্য সবাই তালাবদ্ধ, তোরা শুধু চল"।
সকাল-বিকাল রিমোট টিপে দেখবে আমার ছবি
সারা বাংলার মিডিয়াকাশে আমিই একটা রবি।
মন্ত্রী নেব ডজন খানেক জ্যাঠা, চাচা, মামা
বলে দিতাম, "পাঁচ বছরে যেমনে পারিস কামা।
ভূমি, বিদ্যুৎ, গ্যাস, কয়লা কিংবা বিমান, রেল
লুটে পুটে খেতে হবে থাকতে আমার বেল।"
খান তিনেক করব বাড়ি লন্ডন, আমেরিকা
বিপদ আঁচ করতে পারলেই উড়ব ছেড়ে ঢাকা।
পাঁচ বছর চেটে-চুষে সোনার বাংলাদেশ
বাকি জীবন নিউ ইয়র্কে কাটিয়ে দেব বেশ।।