ঘনিয়ে আসা ঝড়ের বেগে
মাথার উপর চালাও নেই
ভেসে গেছে পোষ্য স্বজন
গাছ গাছালি মাঠ থৈ থৈ।


আকাশ মাটি জলের তোড়ে
দিগ্বিদিক সব একাকার,
গরু ছাগল খোরাকি চাল
শূন্য সবই কেবল হাহাকার।


ক্ষেত খামারের শস্য এখন
চাষীর চোখের অশ্রুবিন্দু,
নদীর স্রোতের মাতাল ঢেউয়ে
মিশে গেছে স্বেদবিন্দু।


আধুনিকতার ঘেরাটোপে
ছন্দে মোড়া আমার শহর
এমন দারুণ বিপর্যয়ে
মুখ থুবড়ে গুনছে প্রহর।


বাতিস্তম্ভ কোমর ভেঙে
প্রাণ কেড়েছে প্রিয়জনের
রাস্তাভরা গাছের লাশ
অন্তর্দাহ বিরস মনের।


জল বিহনে কাটছে বেলা
বিদ্যুত বিপর্যয় শহরে
দুর্যোগের অশনি সংকেতে
সভ্যতা পড়েছে মুষড়ে।


শক্ত করে ধরো হাত
উঠে দাঁড়াও প্রিয় স্বদেশ
ভেঙে গেলেও হারবো না
শপথ নাও নির্নিমেষ।


থমকে যাওয়া রাতের আকাশ
সাজবে তারার মালায়
ঝলমলিয়ে উঠবে সূর্য
পুব দিগন্তে নবীন প্রভায়।


দীন বাঙালী আমার স্বজন
গড়বো আবার মাথার চাল
জল সরিয়ে করবো আবাদ
শক্তহাতে ধরবো কোদাল।


দিনের মত দেখবো রাত
আবার গাঁথবো ভগ্ন প্রাচীর
হাতে হাতে ভরিয়ে নেবো
শূন্য ললাটে রঙিন আবীর।


ধ্বংসস্তূপে গড়বো বসত
নতুন করে গাইবে পাখি
প্রাণের প্রিয় বাংলাভূমি
ফলে ফুলে ভরবে শাখী।


শপথ নিয়ে পথ চলবো
সততাকে রাখবো হৃদে
স্বজন হারানো মানবতার
সঙ্গে থাকবো পদে পদে।
      (১৩ই জ্যৈষ্ঠ ১৪২৭)