কতদিন পরে আবার এ পথে ফিরছি!
রেলগাড়ি থেকে নেমে নৌকায় চেপে নামিয়ে দিল
শৈশবের সেই জায়গায়,
যেখানে এক টুকরো কাপড় ল্যাংটি করে  
নদীর বুকে লাফিয়ে পড়তাম, সেই সোনামুড়ির ঘাট।
ঘাট থেকে বাড়ি, এতটুকুন পথ চোখ বেঁধে ও চলে যেতে পারি।
এই আল পথ, কুমড়দের মাটির হাড়ি পোড়ানো সেই গন্ধ
এখনো যেন শৈশবের সব কিছু মনে করিয়ে দেয়।
কুমাড় পাড়ার শেষ মাথায় এক জটাধারী পাগল থাকত
তাঁকে দেখলেই ভয়ে শরীর কাঁটা দিয়ে উঠতো।
গোঁফ দাড়িতে পুরো মুখ ঢাকা থাকতো সব সময়।
মাঝে মাঝে সে মরা মুরগী কুড়িয়ে এনে
সিদ্ধ করে খেয়ে ফেলত।
একদিন আমি আর মালতী চুপিসারে
পাগলের ডেরায় ঢুকেছিলাম
পাগল টা তখন ঘুমচ্ছিল বুঝি?
মালতীর পা লেগে একটি হাড়ি উল্টে যেতেই
সে ক্ষিপ্ত হয়ে দা হাতে আমাদের তাড়া করেছিল।
দুজন দৌড়াতে দৌড়াতে কলেজে শুকিয়ে গিয়েছিল প্রায়।
আজও সে সব কথা মনে হতেই
চোখ দুটো ছল ছল করে,
আজও নদী বয়ে চলছে টাল মাটাল ভাবে
আজও কুমার পাড়া আছে
নেই মাটির হাড়ি পোড়ানো র গন্ধ।
সময়ের দৌড়ে সব কিছু বদলে যাচ্ছে ক্রমশ
এবরো থেবরো মেঠো পথ এখন
যৌবনা পিঁচ ঢালা কালো চক চকে
বিয়ের পিরিতে বসে মালতিও
চলে গেলে কোন দেশে তাও জানা নেই
কিন্তু এখনও দাঁড়িয়ে আছে
আমার মতো বুড়িয়ে যাওয়া ডুমুর গাছটি
আর দু একটি ছবেদার গাছ
গাঁয়ের হাটের চায়ের দোকান এখন
শহুরে কফি হাউসের মতো
মিহি সুরে ব্যান্ড কিংবা মেলোডি গানের সুর।
এক টাকার বাতাসা এখন আর নেই
পিজ্জা কাটলেট সিংগারায় বদলে গেছে শরীর
ক্রমশ বদলায়