এই কারণেই রান্নাঘরটা একটু একটু পছন্দ হয়,
এখানে নানারকম উপকরণ দিয়ে যন্ত্রপাতি সহযোগে,
খুশি মতো কেমিক্যাল এক্সপেরিমেন্ট করা যায়।
বাজার থেকে বাড়িতে এক তরমুজ এসেছিলো,
খেতে মোটামুটি ভালো, বেশ মিষ্টিই ছিলো।
ছোটোবেলা থেকেই বাবার কাছে শুনেছি,
তরমুজের খোসা নাকি রান্না করে খাওয়া যায়!
মায়ের রান্নাঘরে একবার তা রান্নার চেষ্টা করেছি।
খেতে মোটেও লাগেনি ভালো, কথাটা মেনে নিয়েছি,
এখন তো আমি অনেকটাই পাকা রাঁধুনি হয়েছি !
রান্নাঘরটা যদিও একটু এলোমেলো, তাতে কি হলো !
দু হাতেই দশ হাতের সব কাজ সেরে ফেলি,
মনে রাখি মোটামুটি কোথায় যে কি ছিলো  !
পুরোনো কফির শিশিতে রাখা গোটা গরম মশলা,
আর সুগার ফ্রি এর একশো গ্রামের কৌটোতে___
জিরে, কালোজিরে, মৌরী, মেথী, চান্দোরী মশলা।
পাঁচফোঁড়ন, জোয়ান, সাদা ও লাল সর্ষে, বীটনুন,
সবাই যেন বলছে ডেকে, হঠাৎ আসা অতিথিকে,
"আমাকে দেখুন" "আমাকে দেখুন" "আমাকে দেখুন"!
হিং এর ছোট্টো কৌটো তার মাঝে দাঁড়িয়ে হাসে,
পোস্ত, চারমগজ, এরা মাঝে মাঝে বেড়াতে আসে।
চিনির কৌটোতে চিনি রেখেছি, চায়ের কৌটোয় চাল,
বাদামের কৌটো ছিলো তার পেছনে, দিয়েছি খবর!
নিজে হাতে নিতে গিয়ে উনি করেছেন গোলমাল ।তুলাই এর আতব আর চিনির হয়েছে জায়গা বদল,
তাই তরমুজের হালুয়ায় চিনি দিতে গিয়ে হলো গোল।
তরমুজের লাল অংশ নয়, সাদা খোসাকে নিয়েছি,
লাউয়ের পায়েস, বাদামের হালুয়া আগে খেয়েছি।
তুলাইপাঞ্জির আতব চাল আর চিনির তফাৎ কম,
চোখে চশমা ছিলোনা, আর খালি চোখে দেখি কম।
লক্ষ্য করার পর আর কি,তার সাথে কিছু চিনি ঢালি,
ছুহারা, আমন্ড, কিসমিস, মেওয়া তাতে দিয়ে ফেলি।
চায়ের জল ফুটছে, মাঝখানে এসে কি প্যাডে লিখি,
অক্ষর সাজাই, শব্দ, কথা দিয়ে কবিতা লেখা শিখি।
"যে রাঁধে, সে চুলও বাঁধে" শোনা এই কথাটা সত্যি,
আকাশে আজ মেঘের মতোই কবিতা কাটে সাঁতার,
মাঝে মাঝে তারা ঘুড়ির মতোই হাওয়ায় খায় গত্তি !
সুস্বাদু এই খাবারটা কাকে দিই, মনে আশা একটাই,
কাটাকাটি খেলায় যদি এই কবিতাখানি পড়ে যায়,
যে পায়, তার কাছেই তরমুজের হালুয়ার খবর যায়।