খুব ছোটোবেলায় সেই হাত আমার প্রিয় ছিলো,
যে হাত আমাকে যত্ন করে খাবার খাইয়ে দিতো।
আবার গরমের রাতে যে ক্লান্ত হাত হাওয়া করতো! তালপাতার পাখার মতো প্রিয় ছিল সেই হাতও ।
আকাশে ছুড়ে দিয়ে ঠিকঠাক লুফে নিতো যে হাত,
সেই হাত শুধু প্রিয় নয়, তাকে ভরসা করা যেতো।
বেড়াতে এসে যে হাত আমার পায়ে আলতা পরাতো!
তাকেই কি ভালো না বেসে তখন থাকা যেতো ?
যে হাতের আঙুল ধরে বেড়াতে যেতাম বিকেলে,
সেই হাত গুলোকেই বা আমি কি করে যাই ভুলে !
যে সব হাত গুলো সন্ধ্যের আগেই চুল বেঁধে দিতো,
তাদের অনেকে আজ আর নেই পৃথিবীতে, ওরা মৃত।
প্রিয় তো ওই হাতগুলোও কিছু কম ছিলো না !
অনেকদিন ওরা আমার কোনো কাজ করছিল না।আর কিছু নিপুন হাতের কাজ দেখেই আমি ভুলেছি!
গোল করে রুটি গড়া, তালপাতার পাখার বুনুনী,
কুলো, ডালি, কিংবা মাটির হাড়ি, কুঁজো, ফুলদানি।
কাঠে ও বাঁশের নানা সরঞ্জাম, মুখোস কিংবা পুতুল,
আরো কত কি কাজ দারুণ করতে পারে যে লোকে!
এমনকি মানুষের হাতেও কতই না সুন্দর ছবি আঁকে!
কত জন কত সুন্দর, মনের মতন গল্প-কবিতা লেখে,
কতজনের থিসিস লেখা থেকে ছাত্ররা কত কি শেখে,
আমি সব হাতগুলো হয়তো নিজের চোখে দেখিনি ,
কি করে তারা এক একজন, এত রকম কাজ পারে,
সে কথা ভেবে ভেবেও কিছুতেই বুঝতে পারিনি।
কারো সেবা নেওয়া উচিত নয়, তা জেনে ও বুঝেও
স্বার্থপর আমি আজো, পা টিপে দেবে ব্যাথা হলে, এমন হাত খুঁজি,ছিঃ ছিঃ কি লজ্জা,লুকোই কোথাও।
সে সব প্রিয় হাত গুলো বুঝি আমার মনটা দেখছে,
সব মনের কথাগুলো ওরা যেন সহজেই বুঝে যাচ্ছে!
ঠিক মনে ভাবছে, প্রয়োজনে শুধু হাত প্রিয় হয় ,
প্রয়োজন ফুরোলে সবাইকেই নিতে হয় বিদায় ।