কে ? কে ? কে রয়েছো অন্ধকারে দাঁড়িয়ে ওখানে ?
আমি ফুলমনি,আপনারা কেউ কি আমাকে চিনবেন!
সংসার ও সন্তান আমারও প্রিয়, কেন তা জানিনে।
গ্ৰামের গরীব বাড়ির বৌ ছিলাম আমি একসময়ে,
করুণা, হঠাৎ দরকারে, সর্ষের তেল যেতো নিয়ে ।
আমার মতো সামান্য নারীর কথা, হানা ক্যাথারিন,
আরেক মহিয়সী নারী, তাঁর উপন্যাসে লিখেছিলেন।
ছাপার কালির প্রথম বাঙালি নায়িকা ছিলাম আমি,
খুব বেশী জনপ্রিয়তা পাইনি বলে আক্ষেপ নেই,
আমার মনের এ সত্য জানেন শুধু অন্তর্যামী ।
কিন্তু একটা দুঃখ মনে আমার আজো রয়ে গেছে,
যার কারনে এত বাংলা বই ছাপা হয়েছে !
সেই পঞ্চানন কর্মকারের কথা অনেকেই ভুলে গেছে,
কষ্ট করে লোহার অক্ষর গড়ে বাংলা হরফ তৈরী,
কথা গুলো কিছুটা জানতেন বটে উইলিয়াম কেরী !
তা না হলে, বাইবেল ছাপাতে, অক্ষর কাটাতে,
বহু খরচ করে তখন আনাতে হতো লন্ডন হতে !
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের বর্ণপরিচয়ও প্রথম প্রথম,  শ্রীরামপুরের কেরীর ছাপাখানায় ছাপা হয়েছিল ।
বলাগড়ের পঞ্চানন মল্লিকের নাম কে জেনেছিল !
শুধু বাংলা নয়, ওড়িয়া ও মারাঠি হরফের কাজও,
হয়েছিলো শুরু, এমনকি ওনার মৃত্যুর পরেও ,
তাঁর দেখানো পথে অন্তত পনেরটি ভাষার অক্ষর তৈরী হয়েছিল, এমন কি বাদ যায়নি চীনা ভাষাও  !
তাকে নিয়ে হুগলি ও কলকাতায় টানাটানি হয়েছিল।
মুক্তোর মতো হাতের লেখা, সেই খুসমৎ মুন্সিকে,
পঞ্চানন কর্মকার, নিজে খুঁজে বের করেছিলেন।
পঞ্চাননকে তো উইলকিন্স,ত্রিবেনীতে পেয়েছিলেন।
দয়া করে আপনারা পারলে, এসব কথা মনে করে, ওনাকে আমার হয়ে, একটু কৃতজ্ঞতা কি জানাবেন !