পুরুর জেদ দেখে স্তম্ভিত হন যেমন আলেকজান্ডার,
চার্লস টেগার্ট অবাক, জেদ দেখে বাঘা‌ যতীনের !
মৃত্যু আসন্ন, তেষ্টায়‌ গলা শুকিয়ে একদম কাঠ,
বুকের ছাতি ফেটে যেতে‌ চায়, তবু মুখ ঘুরিয়ে নেয়।
খাবেনা শত্রুর হাতে জল,টেগার্ট অবাক হয়ে তাকায়।
কুখ্যাত সেই অফিসার বাঙালি বীরকে শ্রদ্ধা জানায়!


মাতা শরৎশশী আর পিতা উমেশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়,
কয়া গ্ৰামে জন্ম হলেও বাড়ি ঝিনাইদহে,‌ কুষ্ঠিয়ায়।
বিধবা মায়ের সাথে দিদি বিনোদবালা-জ্যোতি মিলে,
মামার বাড়ি কয়ায় তারা বাড়ছিল যে তিলে তিলে।
ছোরা হাতে বাঘের সাথে করেছিলো সে মারামারি,
বাঘা যতীন নাম পেয়েছে, বাঘ পাঠিয়ে যমের বাড়ি।


বড় হলেও দুরন্তপনা কি আর একেবারে ছেড়ে যায় !
সুযোগ পেলেই কথায় কথায় সে দুষ্ট ইংরেজ পেটায়।
ঘী বিক্রির ছলে গ্ৰামে গ্ৰামে ঘোরে কুমোর আড়ায়,
তলে তলে আসলে সে ঘুমন্ত দেশবাসীদের জাগায়।
পুলিশের জ্বালায় ঘুম আসেনা তাঁর চোখের পাতায়,
দিন কাটে জার্মানি অস্ত্রের আশায়, কপোতপোতায়।


গদরের কোনো বিশ্বাসঘাতক পরিকল্পনা করে ফাঁস,
হঠাৎ করেই ডেকে নিয়ে আসে সেই বিশাল সর্বনাশ।
অস্ত্রের জাহাজ গুলো তো এভাবেই ধরা পড়ে যায়,
শুধু তাই নয় কিভাবে যেন পুলিশের কাছে খবর যায়।
আক্রমণের খবরটা আগে ভাগেই যতীনও পেয়ে যায়,
তারা সাহসী পাঁচজন সম্মুখ সমরের সিদ্ধান্ত নেয়।


একঝাঁক পুলিশের সাথে যুদ্ধ বুড়িবালামের তীরের !
তাঁদের সেই অসম লড়াইয়ের কথা পড়েছি যতবার,
"এতো রক্ত ছিল !"  ভেবে কেঁপে উঠেছি ততবার।
দৃশ্যটা ভেবে অবুঝের মত জল এসেছে আঁখিপাতে।
ইন্দুবালা, দিদির সাথে তুমিও কেঁদেছিলে ? জানি না,
আর তোমাদের তো,চোখের জল ফেলাও ছিল মানা।