আমার মায়ের শুকাদার বৌ তুমি, পাড়াতুতো বৌদি,
দিম্মার ডাকে, তোমার প্রথম সন্তান,"হারাধনের মা" ।
পাড়ার লোকে ছোটো ছেলে "অজয়ের মা" বলে না,
মেজো ছেলে "কানাই দাদা"র মা বলেও ডাকে কেউ,
তোমার একমাত্র কন্যা কনক, "কনর মা" তুমি তাই।
এসব জেনেছি আমি অনেক পরে, বড়ই ধীরে ধীরে,
ছোটোবেলায় তোমাকে দেখার কথা বেশ মনে পড়ে।
অজয় তখন খুব ছোট্টো, আমার বয়েসটা মনে নেই,
মায়ের আঁচল ধরে তোমাদের বাড়ি বেড়াতে যাই।
মামার বাড়ি যাবার পথে বাসে টফি কিনে বেশ খাই !
দেখি চেয়ে চেয়ে নারকোলের টুকরো ফেরি করা হয়,
আমি চাইলেই শুনি, "বাইরের কাটা ফল খেতে নেই"।
বাড়িতে নারকোল ফাটালেই প্রাপ্য নারকোলের জল,
নারকোলের টুকরো,কোরা নারকোল, প্রিয়‌‌ এক ফল। আহা ! কত যত্নে, কি সুন্দর করেই যে কাটে ওরা,
মনে হয়, বাড়ির চেয়ে যেন একটু বেশিই চওড়া,
সবগুলোই প্রায় সমান, যেন এক টুকরো চাঁদের হাসি,
নারকোলের টুকরো খেতে আমি যে বড় ভালোবাসি !
জেনেছি, বাড়িতে কেউ এলে দেয় সিঙারা ও মিষ্টি,
সুজির হালুয়া, লুচি, অথবা ফুলো ফুলো চিঁড়ে-ভাজা,
চা-বিস্কুট,‌ নাড়ু-মুড়কি, যা কিছু হোক নিজের সৃষ্টি।
এসব কিছু দিয়েছিলে কি না তা আজ আর মনে নেই,
মনে আছে, আমি যে অনেক খুশি হয়ে গিয়েছিলাম,
হাতে বেশ বড়সড় এক টুকরো চাঁদের হাসি পেয়েই !
আমার "নারকোল মামী" তো তুমি তারপর থেকেই।