নাটকের পট পরিবর্তন হয়েছে বহু বছর আগেই, যাবেনা ফেরা সেই স্বর্গে আর তো কিছুতেই।
ছোটো মেয়ে রেনু ছিল, বাড়ির সকলের আদরের!
মা, বাবা, দাদা, দিদিদের ও যেন ছিল চোখের মণি,
পড়াশোনা শেষ না হতেই বিয়ে হলো আগে ভাগেই।
কাজে কাজেই বিয়ের পর এম.এ পড়া ডিসট্যান্সে।
পরীক্ষাগুলো অবশ্য দিতে হতো বর্ধমানে এসে।
মেস বাড়ির একমাত্র বিবাহিত মেয়ে বলে কথা,
বাড়িউলি কাকিমার কাছে খাতির ই আলাদা !
একঢাল দীঘল চুল, লম্বা গড়ন, লক্ষ্মীমন্ত চেহারা,
মেজোবউকে পেয়ে শাশুড়ি মা আনন্দে আত্মহারা।
শ্বশুরবাড়িতে প্রতি বৃহস্পতিবার নিজেও পরেন,
আর আলতার কথা তিনি, রেনুকেও মনে করান।
বর্ধমানের ভাড়া বাড়িতেও বাড়িউলি কাকিমাকে,
বৃহস্পতিবারে আলতামাসি আসে আলতা পরাতে।
কাকিমা কিন্তু ভোলেন না রেনুকে ডেকে নিতে।
আলতা পায়ে দিতে রেনুর ভালো লাগে বরাবর,
অথচ এই কাজটা নিজে নিজে করা বড় ই কষ্টকর।
তুলি নয়,বুড়ো আঙুলের, অত্যন্ত নরম ছোঁয়ায়,
আলতামাসি খুব সহজেই সুন্দর আলতা পরায় ।  আহা! রেনু যেন মনে মনে স্বর্গে পৌঁছে যায় !
খুশিতে, আনন্দে চোখ বুজে আসতো আবেশে,
কৃতজ্ঞতা জানানো কি যায় শুধু মিষ্টি হেসে ?
ইচ্ছে হতো আলতা মাসিকে একটা প্রণাম করে,
সেখানেও বারন, জাতের বাধা, কি আশ্চর্য !
আফশোষ হয়‌ এখনও, এই মধ্য বয়েসে এসে,
ভোলেনি সেই আলতামাসিকে, আজও মনে পড়ে।