আমার প্রাণের ঠাকুর গীতিকবিতা-৩
শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র
শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূল চন্দ্রের আদর্শ ও উপদেশ::


ঈশ্বরের নাম
———————–


## ঈশ্বর বা সৃষ্টিকর্তাকে কোন নামে ডাকা সর্বোত্তম, আমরা এ বিষয়ে অনেক সময় দ্বিধায় পড়ে যাই।তাই ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র আমাদের এ বিষয়ে সকল সমস্যার সমাধান করে দিয়েছেন, যাতে আমাদের মনে আর কোন দ্বিধা না থাকে।
১/ ভগবান,ঈশ্বর,ঠাকুর বললে কেমন জানী আকাশের কেউ বা শূণ্য শূণ্য মনে হয়,তার থেকে কৃষ্ণ বললে নিজের বা আমার কৃষ্ণ মনে হয়। তাই ভগবান, ঈশ্বর, ঠাকুর এর চেয়ে কৃষ্ণ বললেই ভাল হয়। ( আলোচনা প্রসঙ্গে – ১৪, পৃষ্ঠা -৩৩)
৭, ১৫ খন্ড,১৬/১/৪৯)
৩/ তবে সেই আদি কারনকে জানতে হবে,অনাদিরাদি – গোবিন্দে যেয়ে পৌছাতে হবে।তাকে না পেলে কিছুই পাওয়া হলো না,তাকে না জানলে কিছুই জানা হলো না। ( আলোচনা প্রসঙ্গে, ২য়,,২১/১২/৪১)
৪/ ভূত মহেশ্বরের একটা দিক হলেন শ্রীকৃষ্ণ।তিনি বেত্তাপুরুষ। বিধি তার বোধিতে স্ফুরিত হয়েছে। ( আলোচনা প্রসঙ্গে / ২১/ পৃ.২৯৬)


ভগবানের সাথে আমাদের সম্পর্ক
————————————————–


## ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র এমনি পরম ভক্ত ছিলেন যে, তার সারা জীবনের সকল কর্ম, বলা,চলা সকল কিছুই ভগবানের কৃপা বলে মনে করতেন।এবং সকলেই বুঝাতেন ভগবানের সাথে আমাদের সম্পর্ক কতটুকু।
১/ পরমপিতা দিলে হয়, আমি বুদ্ধি করে বা চেষ্টা করে কিছু বলতে পারি না।তিনি যখন যা যোগান,তেমনি বলি,তেমনি চলি।এছাড়া আমার উপায়ও নেই।( আলোচনা প্রসঙ্গে, ২য়, ২০/১২/৪১)
২ / জীব কৃষ্ণের নিত্য দাস যবে ভুলি গেলা,মায়া পিশাচী তার গলে দড়ি দিলা।মানুষ যদি ভগবানের বাঁধনে বাঁধা না থাকে, তাহলে শয়তানের বাঁধনে বাঁধা পড়বেই যেকোন না কোন রকমে। ( আলোচনা প্রসঙ্গে, ২য়,১২/১২/১৯৪১)
৩/ ভগবান সবার কাছে সমান। আমরা ভগবানকে ততখানি পাই যতখানি ভক্তি অনুরাগে তার দিকে অগ্রসর হই।আলোর কাছে যত যাব তত আলো অনুভব করব ও তাপ পাব।কম-বেশী বোধ হয় আমাদের এগোন- পিছোন অবস্থায় থাকার দরুন।( আলোচনা প্রসঙ্গে, ১২ খন্ড,১৯/৬/৪৮)
৪/ সেই শোক ভাল যা ভগবানের দিকে টেনে নিয়ে যায়।ভগবানের থেকে বিচ্ছিন্ন করে যা, তা তো ভাল না। ( আলোচনা প্রসঙ্গে, ১৫ খন্ড,১২/২/৪৯)
৫/ যাদের চলা, বলা,করা,জানা ভগবানে অর্থান্বিত হয়ে উঠেনি,বাস্তবে,সমন্বয়ে,সামঞ্জস্যে তাদের জ্ঞান যাই হোক না কেন তা পল্লবগ্রাহী মাত্র,বিদ্যা অনেক দুরে তাদের থেকে। ( শাশ্বতী-৬)
৬/ আমার ছেলেবেলা থেকে ধারনা ছিল যে,কেষ্ট ঠাকুর কালো,কিন্তু যখন সন্ধ্যা -টন্ধ্যা করতে বসে তাঁকে দেখতাম,তখন দেখতাম বৌসন্ধ্যার যেমন রঙ,তাঁর গায়ের রঙও তেমনি। ( আলোচনা প্রসঙ্গে – ২২ খন্ড, ২৫/১১/১৯৫৩)


গীতা
————


## ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র ভগবদগীতার কথা বার বার বলতেন।গীতা পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের বাণী।গীতা ছাড়া সনাতনী সমাজের উন্নতি সম্ভব নয়,এজন্যই ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র সকলে গীতা মুখস্থ, ওঠস্থ করতে বলেছেন।
১/ তোরা কতকগুলি গীতার শ্লোক ঠিক করে ফেলবি।গীতা ওঠস্থ হওয়া চাই।গীতাতে সব পাবি। ( পূণ্যপুথি,১১/৩৬)
২/ গীতা সবাইকে পড়াবি।বুঝুক,না বুঝুক,শুনুক,পড়ুক,একদিন বুঝতে পারবে। ( পূণ্যপুথি, ১২/৪২)
৩/ গীতা সম্বন্ধে শাস্ত্রে যত কথা আছে, সবই ঠিক। গীতায় আলোচনা করা আছে,মৌলিক ভাগবত সত্য নিয়ে।আর এটা সনাতন অর্থাৎ চিরন্তন।( আলোচনা প্রসঙ্গে, ১২ খন্ড,৩/৬/৪৮)
হরেকৃষ্ণ
——————
## হরেকৃষ্ণ মহামন্ত্র ছাড়া যে জীবের মুক্তি নেই,এ কথা ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র বার বার বলে গেছেন।আমাদের সকল বিপদ আপদ থেকে মুক্তির উপায় একমাত্র কৃষ্ণ নাম।তাই এই কৃষ্ণ নাম অর্থাৎ হরেকৃষ্ণ জপ, হরেকৃষ্ণ কীর্তন যেমন নিজের নিতে হবে, তেমনি প্রচারও করতে হবে, এই আদেশই তিনি আমাদের দিয়েছেন।তিনি সকাল সন্ধ্যা প্রার্থনার প্রচলন করেছেন, যেখানে সকাল সন্ধ্যায় বলতে হয়, ” জয় রাধে রাধে কৃষ্ণ কৃষ্ণ গোবিন্দ গোবিন্দ বলরে।” অর্থাৎ আমরা যেন সব সময় কৃষ্ণ কৃষ্ণ গোবিন্দ গোবিন্দ বলি, সেই শপথই সকাল সন্ধ্যায় করা হয়।
আসুন, আমরা সকলেই শ্রী শ্রী ঠাকুরের নির্দেশিত চলার পথে এগিয়ে যাই
আর আমাদের এই তুচ্ছ জীবনকে ধন্য করে তুলি।
সাথে থাকুন, পাশে রাখুন।
জয়গুরু!


আমার প্রাণের ঠাকুর -গীতি কবিতা-৩
-লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী


প্রাণের ঠাকুর শ্রী অনুকূল
গাহি তব নাম গান
তোমার নামে এ ধরাধামে
অবিরত চলে নাম।


অজ্ঞান আঁধার দূর করে প্রভু
জ্ঞানাঞ্জন কর দান,
নামর প্লাবন আসুক ধরায়
জাগিয়া উঠুক প্রাণ।


এসো মোর স্বামী প্রভু অন্তর্যামী
রাখিব হৃদ-মাঝারে,
ভক্তি অর্ঘ দিয়ে পূজিব তোমায়
ডাকি প্রভু বারে বারে।


শত জনমের বহু সাধনায়
পেয়েছি প্রভু তোমায়।
তব নাম গেয়ে মানব সকলে
জীবনের পথ পায়।