দেবী আসছেন। মা বীণাপানি, বিদ্যাদায়িনী। তার আগমনের আর মাত্র একটি দিন বাকী। সরস্বতী পূজা হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের একটি অন্যতম প্রচলিত পূজা। সরস্বতী দেবীকে শিক্ষা, সংগীত ও শিল্পকলার দেবী ও আশীর্বাদদাত্রী মনে করা হয়। বাংলা মাঘ মাসের পঞ্চমী তিথিতে এই পূজা অনুষ্ঠিত হয়। শিক্ষা, সংগীত ও শিল্পকলায় সফলতার আশায় শিক্ষার্থীরা দেবীর পূজা করে থাকে।


কথিত আছে, সরস্বতী বিদ্যার দেবী। সরস্বতী নদীরূপা এবং দেবতারূপা। প্রাচীনকালে সরস্বতী নামে একটি নদী ছিল। আর্যরা এই নদীকূলে দীর্ঘকাল বাস করেছে। তাদের কাছে সেই নদী হয়ে গেছে মাতৃরূপা, দেবীরূপা। ধীরে ধীরে সেই নদীরূপা, মাতৃরূপা দেবী হয়েছেন 'সরস্বতী'। সরস্বতী বাগ্দেবী। বাক্-এর স্তুতি দেখা যায় ব্রাহ্মণসাহিত্যে। আরও পরে তিনি হয়েছেন বাক্-এর অধিষ্ঠাত্রী দেবী, বাগ্দেবী। নানা রূপান্তরের মধ্য দিয়ে নানা ভাবনায় আজকের সরস্বতীর রূপ প্রতিষ্ঠা পেয়েছে।


বাকদেবী, বিরাজ, সারদা, ব্রাহ্মী, শতরূপা, মহাশ্বেতা, পৃথুধর, বকেশ্বরী সহ আরো অনেক নামেই দেবী ভক্তের হৃদয়ে বিরাজ করেন। পুরাণ অনুযায়ী দেবী সরস্বতী ব্রহ্মের মুখ থেকে উথ্থান। দেবীর সকল সৌন্দর্য্য ও দীপ্তির উৎস মূলত ব্রহ্মা। পঞ্চ মস্তকধারী দেবী ব্রহ্মা এক স্বকীয় নিদর্শন। বিদ্যার অধিষ্ঠাত্রী দেবীরূপে তিনি পূজিতা সরস্বতীতে। যাবতীয় বিদ্যা, সঙ্গীত, নৃত্য, চারুকলা তথা সব নান্দনিক সৌন্দর্য-মাধুর্যের দেবী সরস্বতী।


পূজার জন্য দেবী সরস্বতীর মূর্তি শ্বেত বস্ত্র পরিধান করে থাকে যা পবিত্রতার নিদর্শন। দেবীর আসন কে পুষ্পশোভামন্ডিত করে রাখা হয়। পরিবারের সকল সদস্য খুব ভোরে স্নান শেষে পরিস্কার বস্র পরিধান করে দেবীর সামনে অবস্থান করে থাকে। পুরোহিত পূজা শুরু করবার আগে পর্যন্ত দেবীর মুখমণ্ডল ঢাকা থাকে। পূজার অর্ঘ্যর পাশাপাশি দেবীর পূজার আরেকটি প্রধান অংশ ছাত্রছাত্রীদের পাঠ্যপুস্তক। সরস্বতী পূজার একটি বিশেষ অর্য্য হল পলাশ ফুল। দেবীর অঞ্জলীর জন্য এটি একটি অত্যবশ্যকীয় উপাদান।


আসুন, বাংলা কবিতা আসরের আমরা সকলেই আগামীকাল বাণী-বন্দনায় রত হবো। আমাদের সকলের মিলিত সাহচর্যে পূজা উপাসনায় সার্থক হবে দেবীর বন্দনা। দেবীর আরাধনা। দেবীর স্তুতি।
বাংলা কবিতা আসরের জয় হোক, বাংলার কবিগণের জয় হোক।
সাথে থাকুন, পাশে রাখুন। জয়গুরু! জয়গুরু! জয়গুরু!


পুষ্পাঞ্জলী মন্ত্র (৩ বার পাঠসহ)
=================
ওঁ জয় জয় দেবী চরাচর সারে, কুচযুগশোভিত মুক্তাহারে।
বীনারঞ্জিত পুস্তক হস্তে, ভগবতী ভারতী দেবী নমহস্তুতে।।
নমঃভদ্রকাল্যৈ নমো নিত্যং সরস্বত্যৈ নমো নমঃ।
বেদ-বেদাঙ্গ-বেদান্ত-বিদ্যা-স্থানেভ্য এব চ।।
এস স-চন্দন পুষ্পবিল্ব পত্রাঞ্জলি সরস্বতৈ নমঃ।।
প্রনাম মন্ত্র
=======
নমো সরস্বতী মহাভাগে বিদ্যে কমললোচনে।
বিশ্বরূপে বিশালাক্ষ্মী বিদ্যাংদেহি নমোহস্তুতে।।
জয় জয় দেবী চরাচর সারে, কুচযুগশোভিত মুক্তাহারে।
বীনারঞ্জিত পুস্তক হস্তে, ভগবতী ভারতী দেবী নমহস্তুতে।।
সরস্বতীর স্তব
=======
শ্বেতপদ্মাসনা দেবী শ্বেত পুষ্পোপশোভিতা।
শ্বেতাম্ভরধরা নিত্যা শ্বেতাগন্ধানুলেপনা।।
শ্বেতাক্ষসূত্রহস্তা চ শ্বেতচন্দনচর্চ্চিতা।
শ্বেতবীণাধরা শুভ্রা শ্বেতালঙ্কারব‌ভূষিতা
বন্দিতা সিদ্ধগন্ধর্ব্বৈর্চ্চিতা দেবদানবৈঃ।
পূঝিতা মুনিভি: সর্ব্বৈঋষিভিঃ স্তূয়তে সদা।।
স্তোত্রেণানেন তাং দেবীং জগদ্ধাত্রীং সরস্বতীম্।
যে স্মরতি ত্রিসন্ধ্যায়ং সর্ব্বাং বিদ্যাং লভন্তি তে।।


দেবীর আগমনীস্তুতি
বাণী-বন্দনায় কবিতা আসর
                       লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী


বিদ্যা-অধিষ্ঠাত্রী দেবী তুমি সরস্বতী,
প্রণাম জানাই আমি মাতা তব প্রতি।
শ্বেতাম্বরা তুমি মাগো তুমি বীণাপানি,
শ্বেত পদ্মাসনা দেবী বিদ্যা প্রদায়িনী।


বাণী-বন্দনায় রত শিক্ষার্থী সকলে,
করয়ে বন্দনা তব ভক্তি শতদলে।
অসীম মহিমা তব করুণা অপার,
বাগদেবী বীণাপানি বিদ্যার আধার।


হংসযুক্ত রথপরে হাতে বীণা ধরা,
শুক্লাম্বরা তুমি শ্বেত আভরণে ভরা।
ধূপ-দীপ জ্বালি সবে ভক্তিযুক্ত মনে,
পুষ্পাঞ্জলি দেয় সবে দেবীর চরণে।


কবিতা আসরে হেরি যত কবিগণ,
লিখেন কবিতা তব পূজিয়া চরণ।
প্রণমামি সরস্বতী বিদ্যা দাও মোরে,
কহয়ে লক্ষ্মণ কবি দুই হাত জোড়ে।



---------------------------------------------------------
একই দিনে কবির স্বরচিত কবিতা পৃথকভাবে প্রকাশ না করার জন্য
একই সঙ্গে দেবীর আগমনীস্তুতি-এর সাথে সন্নিবিষ্ট করা হল।
অসুবিধার জন্য মার্জনাপ্রার্থী।


আজ ভ্যালেন্টাইন সপ্তাহের তৃতীয় দিবস পবিত্রতম চকোলেট দিবস।(হ্যাপি চকোলেট ডে)  দেশে দেশে এই উত্সবের দিনটি পালিত হয় সারা ভুবনজুড়ে।


একগুচ্ছ গোলাপের সাথে ভ্যালেন্টাইন সপ্তাহের তৃতীয় দিনটি ইউরোপ আমেরিকায় উদযাপিত হয় এক বাক্স চকোলেট নিয়ে। সেই প্রাচীনকাল থেকে চকোলেট উপহারের মাধ্যমে পছন্দের মানুষটির কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে বার্তাটি।


প্রাচীনকাল হতে চকোলেটকে আধ্যাত্মিক প্রজ্ঞার বিষয় হিসেবে বিয়ের উত্সবে ব্যবহার করা হতো।  চকোলেটকে  এক ধরনের অ্যান্টি-অক্সিডেন্টস রয়েছে, যা উদ্দীপক, দুশ্চিন্তা নিরোধকের কাজ করে। কাছের মানুষটির দুশ্চিন্তা নিরোধের জন্য আপনিও এক বাক্স চকলেট উপহার দিতে পারেন।


বাংলা কবিতা আসরের সকল কবিগণকে জানাই পবিত্রতম হ্যাপি চকোলেট ডে (চকোলেট দিবস)-এর আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা আর অভিনন্দন। বাংলা কবিতার জয় হোক, বাংলার কবিগণের জয় হোক, বাংলা কবিতা আসরের জয় হোক। সাথে থাকুন, পাশে রাখুন। সকলের পাশে দাঁড়ান। জয়গুরু! জয়গুরু! জয়গুরু!


চকোলেট দিবস (হ্যাপি চকোলেট ডে)  
                       লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী


চকোলেট দিবসেতে চকোলেট চাই,
চকোলেট দিয়ে আজি শুভেচ্ছা জানাই।
জানে ভালো সকলেই আজিকার দিনে,
প্রিয়জনে দিতে হয়, চকোলেট কিনে।


চকোলেট বাক্স সাথে দামী উপহার,
গোলাপী গোলাপগুচ্ছ রেখো দুইচার।
মনে রেখো আজিকে গোলাপ দিবস,
চকোলেট দিলে আজি প্রিয়া হয় বশ।


ভালবেসে চকোলেট দাও প্রিয়জনে,
চকোলেট দিবসের পূণ্য শুভক্ষণে।
গোলাপের গুচ্ছ এক ধরি একহাতে,
ভালবাসা বিনিময় করো প্রিয়া সাথে।


চকোলেট ডে আজিকে করহ পালন,
কাব্য লিখিলেন কবি ভাণ্ডারী লক্ষ্মণ।