কথিত আছে যে ভূত চতুর্দশীর দিনে কিছু ক্ষণের জন্য স্বর্গ ও নরকের দ্বার খুলে যায়, তখন আত্মারা মর্ত্যে নেমে আসেন। পাশাপাশি ভূত-প্রেত নিয়ে মর্ত্যে আসেন রাজা বলিও।


কিন্তু মর্ত্যে রাজা বলির আগমন হয়? বিষ্ণু পুরাণ অনুযায়ী, স্বর্গ, মর্ত্য ও পাতালের অধীশ্বর ও শিবভক্ত দৈত্যরাজ বলি। বলির অত্যাচারে অতিষ্ট দেবতারা বিষ্ণুর শরণাপন্ন হন। দেবতাদের মুক্ত করতে বামন অবতারে বলির সামনে উপস্থিত হন বিষ্ণু। বলির কাছ থেকে তিন পা সমান জমি চেয়ে বসেন বামনকরূপী নারায়ণ। বামন তিন পায়ে কত ভূমি অধিগ্রহণ করতে পারবে, এই ভেবেই বলি তাতে সম্মত হন। তার পর বিষ্ণু নিজের এক পা রাখেন স্বর্গে, অপর পা রাখেন মর্ত্যে, তাঁর নাভি থেকে তৃতীয় পা বেরিয়ে এলে, তা রাখার জন্য বলি নিজের মাথা এগিয়ে দেন। বামনরূপী বিষ্ণুর চাপে পাতালে তলিয়ে যেতে শুরু করেন দৈত্যরাজ। বলির দানবীর স্বভাবে প্রসন্ন হয়ে বিষ্ণু তাঁকে আশীর্বাদ দেন যে, বলি ও তাঁর সঙ্গীসাথীরা মর্ত্যে পুজো পাবেন। তাই ভূত চতুর্দশীর দিনে বলি ও তাঁর সাঙ্গপাঙ্গরা পুজো নিতে পৃথিবীতে আসেন।


ভূত চতুর্দ্দশী বা নরক চতুর্দ্দশীর কবিতা
কলমে-কবি লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী


ভূত চতুর্দ্দশী আজি শুন সর্বজন,
ভূতের বৃত্তান্ত কথা করিব বর্ণন।
মেছোভূত গেছোভূত ভূতের সর্দার,
বেঁটে ভূত মোটাভূত শাকচুন্নি আর।


ব্রাহ্মণের অপঘাতে মৃত্যু যদি হয়,
মরে ব্রহ্মদৈত্য হয়ে পুনঃ জন্ম লয়।
মুসলিম যদি কেউ মরে অপঘাতে,
মহম্মদ ভূত হয়ে ঘুরে মাঝরাতে।


অবিবাহিতা কুমারী অপঘাতে মরে,
অতৃপ্ত বাসনা নিয়ে ঘোরাফেরা করে।
পেত্নীরা শ্যাওড়াগাছে ডালে বাঁধে বাসা,
অন্ধকার রাতে ঝুলে, নাহি পূরে আশা।


বিবাহিতা নারী যদি অপঘাতে মরে,
শাকচুন্নি হয়ে তারা শাঁখা পলা পরে।
ভূত হয় মোর পূত পেত্নীরা হয় ঝি,
লক্ষ্মণ লিখিল কাব্যে ভূত চতুর্দ্দশী।