"শীতল তরুর ছায়ে ...আছে আমাদের গাঁয়ে" - এই পংক্তিটিই যেন কবিতার মূল সুর। কবি লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী তাঁর কবিতায় গ্রামের গাছের ছায়ার কথা বলেছেন। গ্রামের পথে চলতে চলতে গাছের শীতল ছায়া যেন এক পরম আশ্রয়। গ্রীষ্মের দুপুরে ক্লান্ত শরীরে একটুখানি শান্তির পরশ বুলিয়ে দেয় এই গাছের ছায়া। শুধু তাই নয়, এই ছায়া গ্রামের মানুষের জীবনেও শান্তি ও সমৃদ্ধি নিয়ে আসে।
কবি আরও বলেন, গ্রামের প্রকৃতি মায়ের মতো। সে তার সন্তানদের আগলে রাখে। গ্রামের সবুজ শ্যামল প্রান্তর, নদীর কলকল ধ্বনি, পাখির গান - সব মিলিয়ে এক স্বর্গীয় পরিবেশ তৈরি হয়। এই পরিবেশে মানুষ প্রকৃতির কাছাকাছি এসে শান্তি খুঁজে পায়। শহরের যান্ত্রিক জীবন থেকে দূরে, গ্রামের এই শান্ত পরিবেশে মন ভরে ওঠে এক অনাবিল আনন্দে।
লক্ষ্মণ ভাণ্ডারীর কবিতাগুলোতে গ্রামীণ জীবনের সহজ সরল ছবি ফুটে ওঠে। তিনি প্রকৃতির রূপকে যেমন ভালোবাসেন, তেমনই গ্রামের মানুষের জীবনযাত্রাকেও শ্রদ্ধা করেন। তাঁর কবিতায় মাটি ও মানুষের এক নিবিড় সম্পর্ক দেখা যায়।
এই কবিতা শুধু কবিতা নয়, এটি যেন গ্রামের প্রতি কবির গভীর ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ। তিনি চান, মানুষ গ্রামের সৌন্দর্য উপলব্ধি করুক এবং একে রক্ষা করতে এগিয়ে আসুক। কারণ, গ্রামই আমাদের শিকড়, আমাদের পরিচয়।
কবি লক্ষ্মণ ভাণ্ডারীর "আমার গাঁয়ের কবিতা" একটি চলমান প্রক্রিয়া। তিনি আরও অনেক কবিতা লেখার মাধ্যমে গ্রামের সৌন্দর্য এবং মানুষের জীবনকথা তুলে ধরতে চান। আমরা আশা করি, তাঁর এই প্রয়াস সফল হবে এবং তাঁর কবিতা পাঠকদের মন জয় করে গ্রামের প্রতি ভালোবাসা জাগিয়ে তুলবে।
শীতল তরুর ছায়ে ...আছে আমাদের গাঁয়ে
আমার গাঁয়ের কবিতা (তৃতীয় পর্ব)
কলমে- কবি লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী
মাটিতে নিকানো ঘর উপরে ছাউনি খড়
আঙিনা পাঁচিল দিয়ে ঘেরা,
আঙিনায় কলাগাছে কত কলা ধরে আছে
কুয়োতলা বামপাশে বেড়া।
ভাত রাঁধে বড় বউ চাল ভাজে মেজ বউ
ছোট বউ মাজিছে বাসন,
ছোট শিশু আঙিনায় হামাগুড়ি দেয় তায়
ভূমে পড়ি করিছে ক্রন্দন।
রাঙাপথে দুইপাশে ভরে আছে দূর্বাঘাসে
সারি সারি চলে গরুগাড়ি,
ধানের বোঝাই গাড়ি ছুটে চলে তাড়াতাড়ি
নদীঘাটে দেয় তারা পাড়ি।
অজয় নদীর ঘাটে সবে আসি জুটে হাটে
চাল ডাল কেনে তেল নুন,
আলু বেগুন পটল শাকসবজি সকল
দর বেশি দামেতে আগুন।
সবে বেচা কেনা সেরে দিনশেষে বাড়ি ফেরে
পশ্চিমেতে ডুবিছে তপন,
গাঁয়ের মন্দির মাঝে ঢাক কাঁসি ঘন্টা বাজে
লিখে কবি ভাণ্ডারী লক্ষ্মণ।