যা দেবী সর্বভূতেষু… মহিষাসুরমর্দিনী
শ্রী শ্রী চণ্ডীস্তোত্রম্ – (সমাপ্তি) দ্বাদশ পর্ব সমাপ্তি কবিতা
সংগ্রহ, সম্পাদনা ও স্তোত্রপাঠ- লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী।


পুরাণ মতে, মহালয়া থেকে শুরু দেবীপক্ষ৷ বছরে একবার মাত্র পাঁচ দিনের জন্য মা দুর্গা তার ছেলে-মেয়েদের নিয়ে বাপেরবাড়ি আসে৷ এক বছর পর ঘরে ফিরে আসে উমা৷ মেয়ের ঘরে ফেরার আনন্দে জোরকদমে শুরু হয়ে যায় প্রস্তুতি৷ সেজে ওঠে উমার ঘর৷ মেয়েকে তার পচ্ছন্দের খাবার রেঁধে খাওয়ানো হয়৷


দশমী আসতেই উমাকে তার শ্বশুড়বাড়ি পাঠানোর তোড়জোড় শুরু হয়ে যায়৷ রীতি নীতি মেনে মেয়েকে শ্বশুড়বাড়ি পাঠানো হয়৷ সিঁদুর খেলা হল অন্যতম রীতি৷ বিদায়ের আগে সিঁদুর খেলা হয় কারণ, মা দুর্গাকে বাঙালীরা বিবাহিতা নারী হিসাবে মনে করে৷ হিন্দু রীতি অনুযায়ী সিঁথির সিঁদুর আসলে বিবাহিতা নারীর চিহ্ন৷ অনেকের বিশ্বাস, যথাযথ রীতি মনে সিঁদুর খেলা হলে অকালে কোন মহিলা বিধবা হবেন না৷


বিজয়া দশমীর দিন আগে মাকে বরণ করা হয়৷ পান পাতা, সন্দেশ ও সিঁদুর দিয়ে উমাকে বরণ করা হয়৷ মুখে পান পাতা ছুঁইয়ে, সন্দেশ খাইয়ে এবং সিঁদুর পড়িয়ে করা হয় বরণ৷ একপরই বিবাহিতা বাঙালী মহিলারা মেতে ওঠে সিঁদুর খেলায়৷ মাইকে আজও ধ্বনিত হয় বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের অভয় মন্ত্রপাঠ।


যা দেবী! সর্বভূতেষু শক্তিরূপেন সংস্থিতা।
নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমো নমঃ।।


যা দেবী! সর্বভূতেষু মাতৃরূপেন সংস্থিতা।
নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমো নমঃ।।


যা দেবী! সর্বভূতেষু শান্তিরূপেন সংস্থিতা।
নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমো নমঃ।।


মহা আনন্দেই কেটে গেল পূজার দিনগুলো। এবার আবার প্রতীক্ষার পালা একটি বছরের। সবাইকে বিজয় দশমীর আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা আর অভিনন্দন। সাথে থাকুন, পাশে রাখুন। জয়গুরু!


শ্রী শ্রী দুর্গাত্সব-১৪২৬ শারদীয়া পূজা-সংকলন
শ্রী শ্রী দুর্গাপূজার সমাপ্তি কবিতা- ৭
কবি- লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী


বিদায়ের অশ্রুজলে মা মেনকা কেঁদে কেঁদে বলে,
আর না পোহায়িও নিশা আমার উমা যাবে চলে।
সপ্তমী ও অষ্টমী তিথি, আর নবমীতে হয় মহাপূজা।
দশমীতে বিদায় লয়ে কৈলাসে যান দেবী দশভূজা।


একটি বছর তরে হয় প্রতীক্ষা আমা সবাকার।
দেবী দূর্গতিনাশিনী ফিরে পুনঃ আসেন আবার।
বাঙালির দুর্গাপূজায় খুশিতে ভরে সবাকার মন,
বিজয়া দশমীতে দেবী বরণ হয় দেবী বিসর্জন।


পুজার দিনগুলির সুখস্মৃতি হৃদয়ে রয়েছে গাঁথা,
বিদায়ের অশ্রুজলে দুর্গাপূজার সমাপ্তি কবিতা।
দুঃখভরা মন নিয়ে স্তব্ধ আজিকে আমার লেখনী,
দীর্ঘ প্রতীক্ষার সময় শুরু আগামীর আহ্বান শুনি।


আবার আসিও পুনঃ দুর্গা-জগজ্জননী এই বসুধায়,
সমাপ্তি কবিতা লিখেন লক্ষ্মণ কবি তার কবিতায়।