তোমরা যদি জসীম ওয়াসিমের জীবনী শুনতে চাও?
সাঁওতা গাঁয়ের ক্যানেল পাড়ায় ওদের বাড়ি যাও।
দিন-মজুর এক বাবার ছেলে ওরা দুটি ভাই,
এক স্কুলে পড়ে দু-জন একই সাথে পাঠশালাতে যায়।
প্রতিদিন ওদের চাহিদার সাথে যুদ্ধ চলে,
সেটা অভাবের আক্রমণে, কিন্তু কে দেবে যোগান?
বাবা তো নিরুপায় সে চাহিদা মেটাবে কেমনে।
সংসার সামলাতে গিয়ে বাবা ভুলেই গেছে, ছেলে দুটির
লেখা পড়ার বা কি খবর কোথায় যায় কি করে?
অথচ অবহেলার চোটে ওরা অনেক আগেই ছেড়ে
দিয়েছে পড়াশুনা বাবা মাকে না জানিয়ে অগোচরে।
এখন ওরা দুটি ভাই যেন মুক্ত পাখির মত মেলেছে দুটি ডানা,
চলছে ফিরছে যাচ্ছে কোথায় তার নেই কোন ঠিকানা।
মা বকিলে তাতে কান না দিয়ে চলে নিজেদের ইচ্ছা মত,
ঘরে সুখ নেই যায় সুখ কুড়োতে হইয়া অবারিত।
বাবা বাড়ি থেকে যায় কাজ করিতে আযান দেওয়া ভোরে,
সারাদিন ঝরিয়ে কষ্টের ঘাম আবার রাইতে বাড়ি ফেরে।
আজ সারাদিন বাড়ি ফেরেনি খাবারও খায়নি
হঠাৎ মায়ের মনে বেঁধে গোল মা শুধু ছটফট করে,
মা বাড়ি থেকে বেরিয়ে সবাইকে বলে আমার জসীম
ওয়াসিমকে দেখেছো তোমরা পড়েছি কি কারো চোখে ?
ওরা যে আজ বাড়ি ফেরেনি একটি দানাও দেয়নি মুখে।
দু,জন পাশের বাড়িতে অনুষ্ঠানে ছিলো মগ্ন গান বাজনায়,
এ দিকে মা খুঁজে পাগলের মত বুকটা ভাসিয়ে কাঁন্নায়।
রাস্তার মাঝে একজন ছুটে কাছে এসে বলে শোন!
ওগো জসীম ওয়াসিমের মা, তুমি কি তোমার ছেলেদের
খোঁজ? ওদেরকে পাচ্ছ না? মা কয় নারে ভাই না,
কোথায় গেলো ওরা ? সারাদিন দেখা ওদের পাচ্ছি না।
পথিক বললো ঐ যে দেখো পাশের বাড়িতে শুয়ে আছে
তোমার দুইটি বুকের ধন, বিদ্যুৎ পৃষ্ট হয়ে চলে গেছে
দুনিয়া ছেড়ে এ জীবনের মতন।
মায়ের মুখে নেই বোল অজ্ঞান হয়ে শুয়ে পড়লো মাটিতে,
বাবা এখনও জানতে পারেনি খবর, আসেনি যে বাড়িতে।
মা বাবার আগে সন্তানের মৃত্যু বলো কে পারে সহিতে,
জ্যান্ত লাশের ন্যায় মা বাবা হয়ে রইলো পৃথিবীতে।