দু-বিঘা জমি চাষ করি বর্গা ভাগে
ফসল হলে তিন ভাগে ভাগ হয়
সে ফসলের এক ভাগ পায় মালিক
আর আমি দুই ভাগ পাই,
এই দিয়ে কোন রকম দিন চলে যায়।
ধরুন, বাজারের গলে পচে যাওয়া অবহেলিত
সবজি কম দামে কিনে বাড়িতে দিয়ে
বধূ কে বলি এ গুলো অন্তত এক সপ্তাহ চালাবে,
কখনও ছেলে যদি পোশাকের বায়না ধরে
সেকেন্ড হ্যান্ড পোশাকের দোকানে গিয়ে
কারো ব্যবহারের পোশাক কম দামে কিনে
ছেলে কে দিয়ে বলি এটা ছয় মাস চালাবে।
ছেলে এবং ছেলের মা কখনও কোনদিন
আমাকে প্রশ্ন করেনি, কড়া নজরে
চায় নি কখনও আমার পানে,
কারন, সংসার চালাতে গিয়ে আমি যে মৃতপ্রায়
সেটা ওরা খুব ভালো করেই জানে।
বধূর পরনে যে শাড়ি সেটা কবে কিনে দিয়েছি
আজও মনে পড়ে না আমার,
গত মাসে কর্তা বাবু বলে ছিলো
জমি টা ছেড়ে দিতে এবার
গেলাম বাবুর বাড়িতে, ডাক দিলাম কর্তা মশাই বলে,
বাবু ঘর থেকে বেরিয়ে আমার কাছে এলো চলে।
বললাম, বাবু আপনার দুটি চরণ ধরিয়া বলি
পেটে মারবেন না আপনার জমি টা অন্য জনকে দিয়ে,
আমি ল্যাংরা খোরা মানুষ
আমাকে কেউ নিবে না কাজে
মরে যাব বাবু আমরা সবে মরে যাব না খেয়ে।
জমিওয়ালা কোন কিছুতেই রাজি হলো না
জমি টা ছেড়ে দিয়ে চোখের জল মুছতে মুছতে
অবশেষে ফিরে এলাম বাড়িতে,
এসে দেখি চুলো র আগুন জ্বলে নি এখনও হাঁড়ি তে।
কিছু বলার আগেই বধূ আমায় বললো
কর্তা মশাই জমি দিলো না, ঠিক বলেছি তো?
ক্ষুধার্ত পেটে কান্না ভেজা চোখে তার এ কথা
যেন আমাকে নরকের জ্বলন্ত আগুনে নিক্ষেপ করলো।
বধূ আবার বললো ঘরে চাল নেই
ছেলেটা সারাদিন না খেয়ে কি করবো এখন?
চোখের পানি ছেড়ে বড় কষ্টে বলে ফেললাম
চলো বিছানায় গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ি আজকের মতন।
আহারে জীবন চলছে এখন কষ্টের জলে ডুবে,
আপন বলতে কেউ নেই পাশে দাঁড়াবার
এমনি করে নিত্য দিন না খেয়ে মরে যেতে হবে।