আমার কবরের মাটি দিও একটু আলগা করে;
যদি কখনো আবার ফুসফুসে নিঃশ্বাস ফিরে আসে,
যেন বদ্ধ-কুটির অল্পেই ভেঙে উঠে বলতে পারি:
মরতে যে অভ্যস্ত সে চিরতরে মরে না!


আমার কবরের এক কোণে খানিক ছিদ্র রেখ,
অক্সিজেন প্রবেশ করতে পারে যেন মৃত্তিকা ভেদে;
যেন আরেকবার পৃথিবীর নিঃশ্বাস নিয়ে বলতে পারি:
বাঁচার সাধে কেন প্রাণ কখনো ভরে না?


আমার কবরের মাটির সাথে মিশ্রিত করে দিও
আপনজনের সেই আবেগঘন কান্নার করুন সুর;
সে কান্নার মায়ায় পড়ে হলেও যেন উঠে বলতে পারি:
প্রাণের বন্ধন ছিঁড়ে প্রিয়জন কভু সরে না।


আমার কবরের কোথাও একটি জানালা রেখ,
যেন বাতাসে ভেসে বেড়ানো প্রিয়তমার সেই
‘ভালোবাসি’ কথাটি বারবার শুনে আমিও বলতে পারি:
তোমায় অনেক ভালোবাসি প্রিয়তমা!


আমার কবরের চারপাশে পুষ্প বৃক্ষ রোপণ করে দিও,
যেন ফুলের মোঁ-মোঁ গন্ধে আমার ঘুম ভেঙে যায়,
আর জেগে উঠে চিৎকার করে যেন বলতে পারি:
জীবন কখনো মৃত্যু্র কাছে হারে না।


আমার কবরের কাছে আসার রাস্তাটা মসৃণ করে দিও,
ঘুম ভাঙতে দেরি হলে মা যে এসে ডাকবে আবার!
‘ওঠ খোকা, আর কত ঘুমাবি?’ তখন যেন বলতে পারি:
উঠছি মা! তোমার বাছা আর ঘুমাবে না।


আমার কবরের মাটিতে চিহ্ন এঁকে দিও কিন্তু,
ফিরতে দেরি হলে বাবা যে আসবে খুঁজতে আবার!
‘আর কতক্ষণ? ঘরে যাবি না?’ তখন যেন বলতে পারি:
নিয়ে যাও বাবা, এখানে আর ভালো লাগে না।


আমার কবরের মস্তক ধারে দুয়ার কেটে দিও;
যেন আপনজনদের সুখগুলো স্বচোখে দেখতে পারি,
আর দুঃখের সময়ে যেন ঠিক ছুটে এসে বলতে পারি:
তোমরা সুখী না হলে আমার ঘুম আসবে না।


আমার কবরের ভেতরে কলম-খাতা দিয়ে দিও,
একাকী থাকলে মস্তিষ্কে আমার কবিতাদের হয় ভিড়,
যেন কবিতার টানে জেগে উঠে আবার লিখতে পারি:
কে বলেছে আমার ঘুম আর ভাঙবে না?



(২১ আগস্ট ২০২৩, চাঁদ উদ্যান, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭)