কৃত্রিম-মেকি যত ছদ্ম, ধূম্রজালে যা কিছু আবদ্ধ,
খুলব মুখোশ মিথ্যার আমি মেকি চিন্তা উল্টাব;
কল্পনায় অঙ্কিত যে বিশ্বকে দর্শি আজ পরোক্ষ,
আমি প্রত্যক্ষ জ্ঞান ছড়িয়ে সে বিশ্বকে পাল্টাব।


এ বিশ্ব ভুবন যাত্রার যা কিছু কল্পিত আবিষ্কার,
অনুমেয় আর শীর্ণ যৌক্তিকতার উপমা ভাণ্ডার;
আমি মানি না সে যৌক্তিকতার দুর্বল মতবাদ,
ধরা জুড়ে উত্থিত যে আবছায়ার অলীক ঝাণ্ডা’র।


এই পৃথিবীতে যত বড় ব্যক্তিত্বের অধিকারী যে,
তত বড় ছদ্মবেশধারী হয়ে স্বকীয়তায় গা ঢাকে;
ব্যক্তিত্বকে রাখতে নিখুঁত ছদ্ম ভূষণ রচে ছলে,
গোপনে যার কুকীর্তি-সম্ভার অহরহ ঘটে থাকে।


বিত্তবান সে তো কালো পথের দীপ্তিমান দিশারী;
সাদা বস্ত্রের আড়ালে যত ভণ্ডামিরত সাধু আত্মিক।
বিজ্ঞানী বিদ্বান সাহিত্যিক নেতা অভিনেতা ধার্মিক,
ব্যক্তিত্বে নয়, ভাব-ভূষণধারী ছদ্মবেশের প্রতীক।


লেখাপড়ায় কারো হয়নি তো মস্তিষ্কের উন্নয়ন কভু,
তবু ধূম্র বিশ্বাসের অবয়বে করেছে মস্তিষ্ককে বন্দি;
ধ্যানেই বাড়ে জ্ঞান, ধ্যান ছাড়া জ্ঞানভাণ্ডার অচল,
অথচ শিখনতন্ত্রে শিখানো হচ্ছে মুখস্থ করার ফন্দি।


আমি সেই চিন্তনে বিশ্বাসী সনদধারী শিক্ষাতে নয়,
এ সনদ আমাকে যোগ্য করবে না বাস্তবিকতায়;
তবে কেন তার এত মূল্য যোগ্য অযোগ্যের মাপে!
আমি ধরি না গণনায় ব্যক্তিত্ব সনদের যোগ্যতায়।


কর্মদক্ষতায় কেবল প্রামাণ্য ব্যক্তিত্বের দাড়িপাল্লা,
অচিরেই স্বীকৃতি হোক বন্ধ সনদভিত্তিক যোগ্যতার;
যোগ্য-অযোগ্যের নির্বাচনে আবার চলে স্বজনপ্রীতি,
কেন পীরের ছেলে পীর আর রাজা হয় পুত্র রাজার!


মুসলমানের সন্তান মুসলমান, হিন্দুর সন্তান হিন্দু,
কেন এই অনুভূতি ঢালা হয় সব অবুঝ শিশুর কর্ণে?
ধর্ম লয়ে কেউ জন্মে না ধর্ম হোক উন্মুক্ত শিশু তরে,
স্ব-জ্ঞানে নিক ধর্মের সিদ্ধান্ত এ অভিন্ন মানব বর্ণে।


আবার দেখি ধার্মিকের ধর্মপনায় কত কত প্রভেদ,
ঐ মতলববাজের দর্শনে যত স্বীয় সিদ্ধি মনে মনে;
তাই নব-নব ধর্মের করে গোড়াপত্তন ঐ ভণ্ড জনে!
মানবসৃষ্ট যত ধর্ম-বর্ণ-বৈষম্য সবই কৃত্রিম মননে।


আমি মানি না এ বৈষম্য অভিন্ন মানবের অনুকূলে,
একনিষ্ঠ মতবাদে উপনিত হতে চাই বিনা বৈষম্যে;
হে মানবকুল, আমার মিছিলে হও শামিল স্ববোধে,
ভেঙে দিতে চাই কলুষিত যত রীতি বিপ্লব-সাম্যে।


॥ রচিত: ০৪ ডিসেম্বর ২০১৮; স্ব-নীড়, বংকুরা, কোটালীপাড়, গোপালগঞ্জ ॥