নিস্তব্ধ শহরে স্তব্ধ আমি, ভীষণ নিঃসঙ্গতা,
ঘিরে ধরেছে আমায় একাকীত্বের স্তব্ধতা।
রাতের শেষ প্রহর, তবু ঘুম নেই দুচোখে;
ঘুটঘুটে অন্ধকার, পৃথিবীটা যেন শোকে।


চিলেকোঠায় বন্দি আমি মরি একা ত্রাসে,
কাঁচের ওপাশে পৃথিবী, দর্শি গবাক্ষ গ্লাসে।
আমি তন্মন, উন্মন, বুঝি না ঘুম জাগরণ,
আমি জানি না ঘুম কি শয়ন নাকি মরণ!


নিঃসঙ্গতায় কেটে গেল বয়সের দুই যুগ,
রটে গেল, ঘটে গেল কত কি কত হুজুগ!
হুজুগে মেতে করল ঘায়েল কত চেনা মুখ,
তবু সঙ্গতা এল না আমার রইলাম বিমুখ।


আর হইলাম আমি ছিন্ন ধরার ভিন্ন কেউ,
শুনতে চাইনি বেকার কুকুরের ঘেউ-ঘেউ;
যে কুকুর দিবালোকে নুন খেয়ে গুণ গায়,
আর রাতের আঁধারের সুযোগে কামড়ায়।


তারচেয়ে একাকীত্বই শ্রেষ্ঠ সঙ্গী আমার,
নেই চাওয়া-পাওয়া‌ কিংবা ভয় হারাবার;
একাকীত্বের কাণ্ডারী আমি সাধি রে আধি,
হতভাগা আমি দুঃখের সাথেই ঘর বাঁধি।


যে চক্ষে দরদ-প্রীতি দেখেছি গো নিভৃতে,
সে চক্ষের পক্ষ ফের দেখেছিও বিপরীতে;
জানি ভালোবাসার নাই ঠাঁই এই পৃথিবীতে,
তাই আক্ষেপও নাই, প্রেম সুন্দর স্মৃতিতে।


একা আমি চলে যাব, পৃথিবীটা রেখে যাব,
ফেলে যাব সব অপূর্ণতা, কষ্ট কেঁদে ফুরাব;
নিয়ে যাব না কিছুই সঙ্গে, সঙ্গী হয় না ভবে,
কিসের সঙ্গ? একাকীত্বই পরম আপন তবে।


রচিত: ১৩ নভেম্বর ২০২৩; মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭