দুঃখ, তুমি কেন এত সহজলভ্য?
কেন এত হীন মূল্য?
কেন এত ক্ষীণ তুল্য?
কেন না চাইতেও এই গরীবের দুয়ারে তোমার হানা?
ধনীর প্রকোষ্ঠে কি তোমার যাইতে মানা?


আজ যদি তোমার ঈষৎ মূল্য হইত,
যদি তোমায় পাইতে অর্থের ব্যয় করিতে হইত;
তাহলে এই গরীবের দুয়ার-
হয়ত তোমার তরে বন্ধ হইত চিরন্তন;
তোমার আমার মাঝে সৃষ্টি হইত না এই বন্ধন।


কারণ আমি বিনিময় দিতে ব্যর্থ হইতাম,
তোমায় সহন অনুভূতির অবোধ্য হইতাম।
আজ তুমি বিনিময়হীন, বিনা মূল্যেই তুমি অসীম।
তাই তো তুমি এই গরীবের সাথী,
আর তোমার আমার এই স্বজনপ্রীতি।


বিত্তবানের ওই বিলাসীতা কি তোমার চোখে পড়ে না?
তার ধনের বিনিময় হইতে কি তোমার ইচ্ছা করে না?
ও সম্পদের পাহাড় কি তোমার দৃষ্টির বাইরে?
তুমি কি পারো না ওই ধনকুব ধ্বসে দিতে অচীরে?
তবে কেন আজ কেবল গরীবের সাথেই যত ভাব?


গরীবের ঘরে তুমি তুচ্ছ, অগুচ্ছ, মূল্যহীন;
যাও, ওই বিলাসীতার ঘুম ভাঙাও।
ওদের নির্বাধ স্বপ্নের বাঁধা হও।
গরীবের স্বপ্ন নাই। ভাঙার মতো কিচ্ছু নাই।
যা আছে, শুধু কষ্ট-বাষ্পে ভেজা মূর্ছিত মরীচীকা রূপ।


তাই ভগ্ন হৃদয় ভাঙিও না আর,
ভাঙা বস্তু ভাঙিয়া লাভ কী তোমার?
এই হৃদয় তো ভাঙা-গড়ায় চিরাচরিত সহনশীল।
ভাঙা-গড়ার চিরচেনা প্রক্রিয়ার মাঝেই জন্ম আমার,
কোনো এক ভাঙা গড়ার ঝড়েই জীবন হারাব আবার।


হে দুঃখ, তোমার খাদ্য কি গরীবের হৃদয়?
কেন খাও কুঁড়ে কুঁড়ে এই গরীবের খর্ব কলিজা?
কভু কি মুক্তি দেবে না আমায়?
নাকি কলিজার সবটুকু খাইয়াই জীবন করিবে নাশ?
তাহলে গরীবের জীবন মানেই কি এক নরক বাস!



॥ রচিত: ০৪ ডিসেম্বর ২০১৮; স্ব-নীড়, বংকুরা, কোটালীপাড়া, গোপালগঞ্জ ॥