জীবন কখনো পরিপূর্ণ হয় না;
তাই বুঝি তোমারেও আমার পাওয়া হইল না!
কারণ, তোমারে পাইয়া গেলে আমার জীবন পূর্ণ হইত;
কিন্তু ঈশ্বর তো কাউরেই পরিপূর্ণ কইরা দেয় না,
কেবল ঈশ্বরই পরিপূর্ণ রয় স্বীয় মহিমায়,
তার নাকি অভাব নাই!
তয় ঈশ্বর আমাগোরে সৃষ্টি কইরা ক্যান্ এত অভাব দিলো?
ঈশ্বর যদি পরিপূর্ণ কইরা দিত, কিইবা ক্ষতি হইত তার!


আমার পরাণে যারে বাইন্ধাছিলাম,
ঈশ্বর তারে কাইড়া নিয়া কার কোল্ ভরাইল?
—আমার কোল্ কইরা এক্কেবারে খালি!
আরে ও-ঈশ্বর! তোমার কাছে তো কম কান্দি নাই!
কত্ত কইরা কইলাম, নিও না আমার বুক থেইকা তারে;
তবুও কাইড়া নিলা? তুমি কি ভালোবাসা বোঝ না?
যেই ভালোবাসায় পূর্ণতা নাই,‌
সেই ভালোবাসা দিয়া আমাগোরে ক্যান্ সৃষ্টি করলা?


জীবনে তো মানুষ কত্ত কি চায়!
আর আমি শুধু তোমারেই চাইলাম,
—তবুও তোমারে পাওয়া হইল না!
অন্য কেউ তোমারে ছোঁ মাইরা লইয়া গেল।
তয় তুমি যদি খুব বিচ্ছিরি আর কালা হইয়া জন্মাইতা,
তাইলে বুঝি তোমারে কেউ নিয়া যাইত না;
তুমি শুধু আমার থাকতা প্রিয়তমা, আমারই থাকতা,
—টিনএজ বয়সের সীমাবদ্ধতায় তোমারে হারাইতে হইত না।


টিনএজের ভালোবাসা বড়ই অভাগা, একদম মূল্যহীন;
তাই তোমার ভাইয়া যখন কইল:—
“এই পিচ্চি পোলারে ছাইড়া প্রতিষ্ঠিত কাউরে ভালোবাসতি,
ও কবে সমর্থ হইব বিয়ার! ততদিন কি তোরে বসাইয়া রাখব?”
কথাটা আমার কেমন লাগছিল, বুঝাইতে পারি নাই তখন;
মনে-মনে জিদ করতাম, তোমারেও কইতাম:
দেইখা লইও, জলদি প্রতিষ্ঠিত হইয়া দেখাব।
হ্যাঁ, সত্যিই আমি খুব জলদিই সামর্থ্য হইয়া গেলাম,
তবুও তোমারে পাওয়া হইল না, তার আগেই তুমি হারাইয়া গেলা;
—এই হার তো আমার না রে প্রিয়তমা! কেবল তোমারই।


তুমি এক অবান্তর বাস্তবতার কাছে‌ হাইরা গেছ,
আর আমি হারছি তোমার কাছে;
আমি আমার কথা ঠিকই রাখলাম, তুমি রাখলা কই?
তুমি হয়ত... ‘বেটার অপশন’ পাইছ গো!
সবাই যা কয়: “মাইয়া মানুষ বেটার অপশনে বিশ্বাসী”;
তুমিও ঠিক সবার মতোই, —যদিও তোমারে ভিন্ন ভাবতাম।
ভাঙল বিশ্বাস, তবুও ভাঙল না তোমারে পাওয়ার আশ্বাস;
জীবনে’ না চাইয়াও কত্তকিছু পাইয়া গেলাম,
অথচ শত চাইয়াও তোমারে পাওয়া হইল না!


তোমারে না পাওয়ার কারণ শুধু তুমি নও,
শুধু তোমারেই দোষী না, দোষটা বড্ড আমারও!
কারণ, তোমারে যে আমি ধইরা রাখতে পারি নাই;
এই দোষেই ইশ্বর আমারে নির্মম নরকে ঠেইলা দিলো-
অসহনীয় এই যন্ত্রণা! পরকালের নরকে ঈশ্বর দয়া করে,
কিন্তু দুনিয়ার নরক বুঝি দয়াহীন!
এরচে বরং পরকালে নরক দিয়া ইহকালে তোমারে দিত,
থাকত না কোনো অভিযোগ আমার, থাকত না আক্ষেপ!
আমি পরকালে পুড়তে পারব, তোমারে ভুলতে পারব না,
আহ্! তবুও তোমারে পাওয়া হইল না প্রিয়তমা,
তোমারে পাওয়া হইল না!


রচিত: ২৯ জানুয়ারি ২০২৩, মোহাম্মদপুর, ঢাকা।