আহ, কী করি, কোথায় যাই!
ভাঙাচোরা মনুষ্য জীবনের পদতলে চুম্বন করে
মাঝেমধ্যে মনে হয়
মৃত্যুর দুয়ার ডিঙিয়ে পালিয়ে যাই নরকে!


কোনোকিচ্ছু ভালো বোধ করি না আজকাল
আধপোড়া কড়াইয়ের রঙের মতো আকাশে
শুক্লা দ্বাদশীর ফোস্কা পরা ঝুলন্ত চাঁদকেও
নুনহীন রুটির মতো বিস্বাদ মনে হয়।
মাঝেমধ্যে মনে হয়
আমি আর তোমার নই, কিংবা তোমাদের।
চিলমচির মতো জলোমগ্ন জীবনকে
মাঝেমাঝে মনে হয়
তোমাদের বুকেই উল্টে দিই!


কী করি, কোথায় যাই!
সখ করে ঘুরতে যাওয়ার পর মনে হয়
উত্তপ্ত রাজপথের ধুলোবালির জাজিমে ঘুমুই।
ছুটি কাটিয়ে অফিসে পা দিয়েই মনে হয়
আরো পাঁচ-সাত দিনের ছুটিতে যাই।
স্বচ্ছ, তুলতুলে, সফেদ তুলোর মতো
নরম ও বিবাগী একেকটি দিন কাটাই।
আকস্মিক মনে হয়
গনভবন সমীপে তর্জনী হাঁকাই, খিস্তি দিই।


শাহবাগ গেলে মনে হয় নীলক্ষেতে ঘুরে আসি
পুরোনো বইয়ের পাতায় বেদনাশ্রু ফেলে কাঁদি।
অসহ্য সব যন্ত্রনার ফিরিস্তি
কোনো বেনামী কবির ঝোলাব্যাগে তুলে দিয়ে
মাঝেমধ্যেই মনে হয়
কবিতা-টবিতা ঠেলেঠুলে চলে যাই!
অভুক্ত পেটে ডাইনিং টেবিলে বসার পর
মনে হয় ওয়ালক্লথ বিছানো পালঙ্কে উঠি
ঘুমন্ত শিশুর পাশে শুই, ইউরিনেট করি আভিজাত্যে!


কী করি, কোথায় যাই!
তোপখানা রোডে নিদাঘপীড়িত দুপুরে
হাতি-ঘোড়ার প্রাণিবন্ধনে দাঁড়িয়ে
মনে হয় উঠে বসি সাউন্ডপ্রুফ এসিবাসে।
মাঝেমাঝে মনে হয়
লাথিলুথি মেরে ভঙ্গে দিই স্টেডিয়াম, খেলার মাঠ
ফ্লাডলাইটের সবটুকু তীর্যক আলোকচ্ছটা
তুলে দিই অন্ধকারের নিস্তব্ধ হাতে!


মধ্যরাতে কামুকী বউয়ের পাশে শোয়ে মনে হয়
নিরুপায় প্রেমিকের প্রাক্তনের পাশে শুই,
অন্যপূর্বার উত্তপ্ত মোলায়েম জঠরে হাত গলিয়ে
তুলে আনি প্রশ্নবিদ্ধ প্রেম, উৎকৃষ্ট নবজাতক।
নিস্তব্ধতার উত্তর মেরুতে হেলান দিয়ে
মাঝেমধ্যে মনে হয়
নৈঃশব্দের শব্দ শুনি; যাঁর কাছে ঋণী নই
তাঁকেই শোধিয়ে দিই একজীবনের ঋণ।


আহ্, কী যে করি, কোথায় যে যাই!