এক যে ছিল চাঁদের কোণায়
          চরকা - কাটা বুড়ি  
পুরাণে তার বয়স লেখে
          সাতশো হাজার কুড়ি ।
সাদা সুতোয় জাল বোনে সে
          হয় না বুনন সারা
পণ ছিল তার ধরবে জালে
          লক্ষ কোটি তারা ।
  
হেনকালে কখন আঁখি
          পড়ল ঘুমে ঢুলে ,
স্বপনে তার বয়সখানা
          বেবাক গেল ভুলে ।
ঘুমের পথে পথ হারিয়ে ,
          মায়ের কোলে এসে
পূর্ণ চাঁদের হাসিখানি
          ছড়িয়ে দিল হেসে ।
  
সন্ধেবেলায় আকাশ চেয়ে
          কী পড়ে তার মনে ।
চাঁদকে করে ডাকাডাকি ,
          চাঁদ হাসে আর শোনে ।
যে - পথ দিয়ে এসেছিল
          স্বপন - সাগর - তীরে
দু - হাত তুলে সে - পথ দিয়ে
          চায় সে যেতে ফিরে ।
  
হেনকালে মায়ের মুখে
           যেমনি আঁখি তোলে
চাঁদে ফেরার পথখানি যে
          তক্‌খনি সে ভোলে ।
কেউ জানে না কোথায় বাসা ,
          এল কী পথ বেয়ে ,
কেউ জানে না , এই মেয়ে সেই
          আদ্যিকালের মেয়ে ।
  
বয়সখানার খ্যাতি তবু
          রইল জগৎ জুড়ি —
পাড়ার লোকে যে দেখে সেই
          ডাকে , ' বুড়ি বুড়ি ' ।
সব - চেয়ে যে পুরানো সে ,
          কোন্‌ মন্ত্রের বলে
সব - চেয়ে আজ নতুন হয়ে
          নামল ধরাতলে ।


(শিশু ভোলানাথ কাব্যগ্রন্থ)