থাক্ থাক্ চুপ কর্ তোরা , ও আমার ঘরে ঘুমিয়ে পড়েছে ।
আবার যদি জেগে ওঠে বাছা কান্না দেখে কান্না পাবে যে ।
কত হাসি হেসে গেছে ও , মুছে গেছে কত অশ্রুধার ,
হেসে কেঁদে আজ ঘুমাল , ওরে তোরা কাঁদাস নে আর ।


কত রাত গিয়েছিল হায় , বসেছিল বসন্তের বায় ,
পুবের জানালাখানি দিয়ে চন্দ্রালোক পড়েছিল গায় ;
কত রাত গিয়েছিল হায় , দূর হতে বেজেছিল বাঁশি ,
সুরগুলি কেঁদে ফিরেছিল বিছানার কাছে কাছে আসি ।
কত রাত গিয়েছিল হায় , কোলেতে শুকানো ফুলমালা
নত মুখে উলটি পালটি চেয়ে চেয়ে কেঁদেছিল বালা ।
কত দিন ভোরে শুকতারা উঠেছিল ওর আঁখি -‘ পরে ,
সমুখের কুসুম – কাননে ফুল ফুটেছিল থরে থরে ।
একটি ছেলেরে কোলে নিয়ে বলেছিল সোহাগের ভাষা ,
কারেও বা ভালোবেসেছিল , পেয়েছিল কারো ভালোবাসা !
হেসে হেসে গলাগলি করে খেলেছিল যাহাদের নিয়ে
আজো তারা ওই খেলা করে , ওর খেলা গিয়েছে ফুরিয়ে ।
সেই রবি উঠেছে সকালে ফুটেছে সুমুখে সেই ফুল ,
ও কখন খেলাতে খেলাতে মাঝখানে ঘুমিয়ে আকুল ।
শ্রান্ত দেহ , নিস্পন্দ নয়ন , ভুলে গেছে হৃদয় – বেদনা ।
চুপ করে চেয়ে দেখো ওরে , থামো থামো , হেসো না কেঁদো না ।


   (কড়ি ও কোমল কাব্যগ্রন্থ)